ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),শরীয়তপুর প্রতিনিধি,২৫ জুলাই, ২০২২ : স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সুফল পাচ্ছেন না শরীয়তপুরবাসী। জেলার কোটাপাড়া ব্রিজে পাশাপাশি দুই গাড়ি অতিক্রম করার কোনো উপায় নেই। গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাজিরা প্রান্ত থেকে সদর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কটি।
অপ্রশস্ত রাস্তা আর সরু ব্রিজের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে এ পথের যাত্রীদের।
তবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর বলছে, সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে, তবে অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই বছর।
জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত যতগুলো ব্রিজ আছে সবকটিতেই একই দশা। একবার কোনো গাড়ি আটকে গেলে অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
সড়কটি কোথাও ১২ ফুট, কোথাও আবার ১৮ ফুট। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে শরীয়তপুর সদর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কটি এখন পরিণত হয়েছে বিষফোঁড়ায়। ঢাকা থেকে সেতু পাড়ি দিয়ে জাজিরা যেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। আর এই ২৭ কিলোমিটার পাড়ি দিতে লাগে দুই থেকে ৩ ঘণ্টা, কখনো বেশি।
জাজিরা টিঅ্যান্ডটি মোড়, কাজীরহাট বাজার, সাহেব বাজার, ডিগ্রি বাজার ও প্রেমতলা সেতু এলাকায় প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার যানজট এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুল চৌকিদার বলছেন, সড়ক বেহাল হওয়ায় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সুফল পাচ্ছেন না তারা।
জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদফতর বলছে, জমি অধিগ্রহণ জটিলতার নিরসন হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ হবে।
আপাতত দুর্ঘটনার আতঙ্ক মাথায় রেখেই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হবে শরীয়তপুরের বাসিন্দাদের।
শরীয়তপুর বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক চৌকিদার বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ সুফল পেয়েছে কিন্তু শরীয়তপুর জেলার ২৭ কিলোমিটার সড়কটি অপ্রশস্ত হওয়ায় দুটি বাস পাশাপাশি চলতে পারছে না যার কারণে যানজটে পড়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রাস্তায় যেহেতু বাস মালিক পক্ষ থাকে না; সেহেতু এর ভুক্তভোগী হতে হয় শ্রমিকদের। সাধারণ মানুষের কথা শুনতে হয় শ্রমিকদের। এ সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।
শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় আমরা দ্রুত ঢাকা যেতে পারছি। কিন্তু শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত রাস্তাটির বেশকিছু জায়গায় দুটি গাড়ি পাশাপাশি হলেই যানজটে পড়তে হয় বিশেষ করে কোটাপাড়া সেতুর ওপর। সেতুর দুই পাড়ে জাজিরা উপজেলার টিঅ্যান্ডটির মোড়ে কাজীরহাটসহ অন্তত ১০টি স্থানে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। তবে কাজের গতি আরও বাড়িয়ে দিয়ে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা দরকার।
শরীয়তপুরের সড়ক ও জনপদ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদওয়ানুর রহমান ভূঁইয়া জানান, শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস থেকে নাওডোবা পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কটি যে অবস্থা রয়েছে তার থেকে আকারে বড় করে ৩৪ ফিটে উন্নীত করা হবে। এ ছাড়া রাস্তাটির মধ্যে যতগুলো কালভার্ট ব্রিজ রয়েছে সেগুলোরও কাজ করা হবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে শরীয়তপুরের যে সরু সড়কটি রয়েছে তার চাপ অনেকটা বেড়েছে, এবং সরু রাস্তা হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের যে প্রকল্পটি রয়েছে তা চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হয়ে গেছে। যেহেতু রাস্তাটি ফোর লেনে উন্নীত করা হবে তাই ভূমি অধিগ্রহণের এখনো অনেকটা বাকি রয়েছে। ক্যাস প্রোগ্রামের মাধ্যমে কীভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা যায় তার পরিকল্পনা চলছে। বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণে যৌথ তদন্ত চলছে। তদন্ত হয়ে গেলে গণশুনানি ও জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সমস্যাগুলো খুব দ্রুত সমাধানে নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ একযোগেই কাজ করছে।
https://youtu.be/JbpQpggtDLI