ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি,শুক্রবার ২২ জুলাই ২০২২ : ঠাকুরগাঁওয়ে মাদ্রাসার ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে বস্তায় ভরে নদীর তীরে ফেলে দেয়া হয়। পরে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১ নারীকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শহরের টাংগন নদী অববাহিকার জোড়া সেতুর নিচ থেকে মাহফুজাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাহফুজা ঠাকুরগাঁও শহরের ডিসি বস্তি মহল্লার খাতুনে জান্নাত কামরুন নেছা কওমি মহিলা মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রামে।
পুলিশ জানায়, একই গ্রামের আমিরের ছেলে ইয়ামিন আলীর সঙ্গে মাহফুজা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক সময় তারা পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করে। তবে এই বিয়ে মেনে নেয়নি ইয়ামিনের পরিবার। এ বছর জুনে মাহফুজা ঠাকুরগাঁও শহরের খাতুনে জান্নাত কামরুন নেছা কওমি মহিলা মাদ্রাসার কিতাব বিভাগে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়।
গত ২১ জুলাই রাত ৩টার দিকে ঘরের বাহিরে থেকে মাহফুজাকে কে বা কারা ডাক দেয়। ডাক শোনে সে ঘুম থেকে জেগে ঘরের জানালার কাছে গেলে কয়েকজন যুবক তার ছবি দেখায়। ছবিগুলো নেওয়ার চেষ্টা করলে তারা শক্তি প্রয়োগ তাকে মাদ্রাসার ছাত্রী নিবাসের টিনের বেড়া ভেঙে বের করে নিয়ে যায়। পরে দুর্বৃত্তরা তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটির মুখে ওড়না পেঁচিয়ে হাত-পা বেঁধে বস্তায় ভরে মাদ্রাসার কাছেই টাঙ্গন নদীর ব্রিজের নিচে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই এমাদুল হক বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও থানায় ইয়ামিনের বাবা আমিরুল, মা জমিলা বেগম নুপুর ও ভাড়াটে গুলজানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলার আসামি গুলজানকে শুক্রবার ভোররাতে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার কবিরাজহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ইয়ামিনের সঙ্গে মাহফুজার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে দেন গ্রেফতার গুলজান আক্তার। কৌশলে ইয়ামিন ও মাহফুজার দৈহিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করেন গুলজান। পরে স্থানীয়রা ইয়ামিন ও মাহফুজাকে দৈহিক মেলামেশার সময় হাতেনাতে ধরে ফেললে মাহফুজার পরিবার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন।
ছেলে ও মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি বিয়ে দিতে না পেরে ইজাব কবুলের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গুলজানকে ভাড়া বাড়ি থেকে বের করে দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইয়ামিন, গুলজানসহ মামলার অন্য আসামিরা বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের জন্য খাতুনে জান্নাত কামরুন নেছা মহিলা কওমি মাদ্রাসায় মাহফুজা ওজু করতে গেলে কৌশলে তাকে ধরে নিয়ে আসে এবং প্রাণে মেরে ফেলার জন্য গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বস্তায় ঢুকিয়ে টাঙ্গন নদীর ব্রিজের উপর নিয়ে আসে। এ সময় কতিপয় মুসল্লি দেখে ফেললে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাহফুজাকে রেখে তারা পালিয়ে যায়।