ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ২৯ মে ২০২২ : মাদকের টাকা জোগাতেই মাদকের ব্যবসা। দুটোই চলে সমানতালে। তাও আবার প্রকাশ্যেই। নারী পুরুষ নির্বিশেষে। নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকেই হয়ে গেছেন কারবারি। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর পরিণত হয়েছে মাদকের হটস্পটে। এলাকার কয়েকজন মাদকসেবী এবং কারবারির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানতে পেরেছে সময় সংবাদ।
ছোটবেলা থেকেই নেশায় আসক্ত ডলি আক্তার। এটি তার ছদ্মনাম। জন্মের পর বাবাকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। মা থেকেও নেই। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন দিনরাত। ডলির নেশার উপকরণের অন্যতম জোগানদাতা তার দীর্ঘদিনের বন্ধু রিপন। রিপনেরও এটি ছদ্মনাম। রিপনের সহজ সরল স্বীকারোক্তি নেশাকে তিনি পেশা হিসেবে নিয়েছেন।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বেড়িবাঁধ এলাকায় কথা হয় দুজনের সঙ্গেই। জানান, সব ধরনের নেশায় আসক্ত তারা। নেশা করতে করতে জড়িয়েছেন ব্যবসায়ও।
রিপন বলেন, আমি প্রতিদিন নিয়মিত নেশা করি। এখন এটা আমার পেশা হয়ে গেছে। মাদক বিক্রি করেই মাদকের টাকা সংগ্রহ করি। এ পর্যন্ত ১৪ থেকে ১৫ বার জেলে গিয়েছি।
ডলি বলেন, নেশা আমি কীভাবে আশক্তি হয়েছি, সেটা আমি নিজেই জানি না। কিন্তু নেশা করা শিখে যাওয়ার পর আর ছাড়তে পারছি না।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এলাকার কয়েকজন মাদক কারবারির নাম। জানালেন দুপুর হলেই শুরু হয় মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনা।
তারা বলেন, এখানে অনেক ভালো ভালো লোকেরাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকাটির প্রতিটি গলির মাথায় কিশোর আর তরুণদের আড্ডা এবং তাদের এই আড্ডার প্রধান কারণও মাদক।
পুলিশ বলছে, প্রতিদিন শুধু রাজধানীতেই মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হয় প্রায় ১০০ মাদকসেবনকারী ও ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িতদের। কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের সরবরাহ।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্সের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, মাদকের যে ভয়াবহতা, সেটা প্রত্যাশিত মাত্রায় কমছে বলে মনে হচ্ছে না। মাদকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই যে বাড়ছে, সেটা বন্ধ করার জন্য দুই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ জন্য মাদকের উৎস মুখটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া মাদকের চাহিদা যদি বন্ধ করতে পারি, তবেও মাদকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর মাদক এবং অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে কামরাঙ্গীরচর অন্যতম।