বরখাস্তকৃত টিটিই শফিককে ‘মানসিক রোগী’ বললেন পাকশীর ডিসিও

SHARE
বরখাস্তকৃত টিটিই শফিককে ‘মানসিক রোগী’ বললেন পাকশীর ডিসিও

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ০৭ মে ২০২২ : বিনা টিকিটের যাত্রী রেলমন্ত্রীর আত্মীয়কে জরিমানা করার অপরাধে বরখাস্তকৃত টিটিই শফিকুল ইসলামকে অনেকটা মানসিক রোগী বানিয়ে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন পাকশীর বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও)। রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো ওই ব্যাখ্যায় ডিসিও বলেছেন, টিটিই শফিক যাত্রীদের হুমকি দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, শফিক ভালো চাকরি না পাওয়ায় মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন।

রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পাকশীর ডিসিও’র পাঠানো বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘ট্রেন কি তোর বাপের? লাথি দিয়া ট্রেন থেকে ফালাইয়া দিব’, যাত্রীকে বললেন টিটিই শফিক।

গত ৫ তারিখ রাতে কিছু যাত্রী ঈশ্বরদী স্টেশনে আসে কাউন্টারে আসেন। কিন্তু কাউন্টারে কোনো টিকিট পাননি। তাদেরকে ঢাকা যেতেই হবে। তাই অগত্যা বাধ্য হয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে যেখানে জায়গা পান সেখানেই উঠে পড়েন। টিটিই শফিক ট্রেনে উঠে যাত্রীদের নিকট  থেকে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকা করে ভাড়া দাবি করেন।

তখন যাত্রীরা জানান, তারা ঈশ্বরদী থেকে টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠেছেন। তারা ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে ভাড়া নেয়ার জন্য টিটিইকে অনুরোধ করেন। কিন্তু টিটিই জবাবে বলেন, ট্রেন কি তোর বাপের? তখন যাত্রী বলেন, ট্রেন কি তোর বাপের মানে কি? বিপদে পইড়া ট্রেনে উঠেছি। আপনি ভাড়াটা নেন।

তখন টিটিই বলেন, দ্বিগুণ জরিমানাসহ খুলনা থেকে ভাড়া দিতেই হবে। তখন যাত্রীরা বলেন, এত টাকা আমাদের নিকট নেই। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে রাখেন। তখন টিটিই সাহেব বলেন, টাকা না দিলে লাত্থি দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দিব। তারপর আরও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন।

তারপর তাদেরকে টিকিট করে দেয়া হয়। যাত্রীগণ টিটিই’র মুখ থেকে এই ধরনের বকা শুনে চরম মাত্রায় মর্মাহত হন। টিটিই অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে ওই ধরনের আচরণ করেন। তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে অভিযোগকারীগণ মনে করছেন।

উল্লেখ্য যে, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য গত ৩ মাস আগে টিটিই শফিককে পাকশী দপ্তরে বুক অফ করা হয়। তারপর তিনি যাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর তাকে কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়।

শফিক আইন বিষয়ে এলএলএম করেন। তিনি তার সহকর্মীদেরকে জানান, তার সব বন্ধুরা জজ হিসেবে কর্মরত আছেন। কিন্তু তিনি ভালো একটি চাকরি পাননি বলে মানসিকভাবে খুব হীনমন্যতায় ভোগেন। কর্মস্থলে সহকর্মীদের সঙ্গে অকারণেই চিৎকার চেঁচামেচি করেন। তার নিয়ন্ত্রণকারী (এসআরআই) সাধারণ ডিগ্রি পাস বলে তাকে তাচ্ছিল্য করতেন। মূলত তিনি তার মানসিক হীনমন্যতায় ভুগছেন। এজন্যই তিনি যাত্রী সাধারণের সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই অযাচিতভাবে খারাপ আচরণ করেন। আগামী রোববার ডিসিও পাকশী দপ্তরে ব্যাখ্যার জন্য তলব করা হয়েছে। তদন্তের জন্য সরকারি পরিবহন কর্মকর্তা পাকশিকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।