ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ইসলামের আলোকে,বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২ : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ। এর মধ্যে নামাজ দ্বিতীয়। আর রোজা তৃতীয়। দুটোই মুসলমানদের জন্য অবশ্যপালনীয়। কিন্তু রমজান এলেই দেখা যায় অনেকে রোজা রাখেন, কিন্তু নামাজ পড়েন না। অথচ নামাজ মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকটবর্তী ইবাদত।
যারা নামাজ না পড়ে শুধু রোজা পালন করেন, তাদের রোজা কবুল হবে কি না, এ বিষয়ে অনেক অভিমত আছে। চলুন, বুখারি এবং মুসলিম শরিফের আলোকে জেনে নিই, রোজা রেখে নামাজ না পড়াকে শরিয়ত কী বলে?
মাহে রমজানসহ সারা বছর আল্লাহর কাছে বান্দার আনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হলো নামাজ। একজন ইমানদার নারী-পুরুষের প্রধান করণীয় ইবাদত নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। নামাজের সময় শরীরের শ্রেষ্ঠ অঙ্গ মাথা মাটিতে লুটিয়ে সিজদায় পড়ে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
রমজান মাসে সব ফরজ ইবাদতের মধ্যে নামাজই সবচেয়ে অগ্রগণ্য। নামাজ ইমানকে মজবুত করে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি: কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত। প্রথম তিনটি গরিব-ধনী প্রাপ্তবয়স্ক সব মুসলমানের ওপর ফরজ। আর শেষের দুটি সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর ফরজ।
‘যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে, তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।’ [ বুখারি : ৫২০ ]
এ হাদিস প্রমাণ করে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোনোভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘সালাত (নামাজ) হচ্ছে ইমান এবং কুফরের পার্থক্যকারী।’ (মুসলিম)
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রুকন বা স্তম্ভ। ইমানের পরই নামাজের স্থান। নামাজ ১২ মাসই আদায় করতে হয়। আর রোজা শুধু মাহে রমজানে ফরজ। একজন মুমিন মুসলমান বছরজুড়ে নামাজ আদায় করবেন–এটাই স্বাভাবিক। এর পর যখন পবিত্র মাহে রমজানের আগমন ঘটবে, তখন নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রমজানের রোজাগুলোও পালন করবেন। একজন রোজাদার শুধু রোজা রাখবেন, নামাজ পড়বেন না–এমনটা কখনো কল্পনা করা যায় না। নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে প্রচুর আলোচনা রয়েছে।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ বেহেশতের চাবি।’ চাবি ছাড়া যেমন তালাবদ্ধ ঘরে প্রবেশ করা যায় না; নামাজ কায়েম করা ব্যতীত তেমনি বেহেশতে যাওয়া যাবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘মুসলমান ও অমুসলমানের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ।’
অর্থাৎ, মুসলমানরা নামাজ পড়েন আর অমুসলমানরা নামাজ পড়েন না। সে হিসেবে যারা নামাজ পড়েন না, তারা নিঃসন্দেহে কুফরিতে লিপ্ত। আর কাফেরের রোজা, জাকাত, হজ কিছুই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। মুমিনের জন্য প্রথম কাজ হলো নামাজির খাতায় নাম লেখানো। কাজেই নামাজ ছাড়া সব আমলই বৃথা–এ ব্যাপারে কারোর কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
মোটকথা, নামাজ ছাড়া কোনো প্রকার ইবাদতেই কোনো কাজ হবে না; যদিও সেটা যত ভালো ইবাদতই হোক। তাই মাহে রমজানের পরিপূর্ণ সওয়াব পেতে হলে রোজা পালনের পাশাপাশি অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।