কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ইউএনওকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি

SHARE
কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ইউএনওকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি

ইউএনও মনজুর হোসেন

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ১০ এপ্রিল ২০২২ : কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার সদ্য যোগদানকৃত নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেন কে বদলি করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে। গতকাল শনিবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে রিলিজ নিয়ে চলে যান তিনি।

বর্তমানে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাফসা নাদিয়া কে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, ইউএনও মনজুর হোসেন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা কর্মরত থাকা অবস্তায় যৌন হয়রানী, প্রতারণার অভিযোগ আনেন এক কলেজ ছাত্রী। বিয়ের প্রলোভনে নিবার্হী কর্মকর্তার লালসার স্বীকার হওয়া ওই কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও প্রেরণ করেন।

কলেজছাত্রীর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ২০২১ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেন দায়িত্ব থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় কলেজছাত্রীর। পরিচয়ের এক পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তা কলেজছাত্রীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে জোড়পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন।

কলেজছাত্রীর বাবা-মা অসুস্থ থাকার কারণে পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। এ বিষয়টি ইউএনও মনজুর হোসেনকে অবহিত করেন কলেজছাত্রী। পরে ইউএনও বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে কলেজছাত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ইউএনও টাঙ্গাইল কুমুদিনী কলেজের সঙ্গে পাওয়ার হাউজের পেছনে একটি বাসা ভাড়া নেন। বাসা ভাড়া নেয়ার আগে তিনি নিজের সমস্ত তথ্য গোপন রেখে, মিথ্যা পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তারা দুই মাস সংসার করেন।

পরবর্তীতে কলেজছাত্রী ইউএনওর পাসোর্নাল ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে জানতে পারে ইউএনও বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। ইউএনওর কাছে কলেজছাত্রী এ বিষয় নিয়ে জানতে চায় কেন তার কাছে বিয়ের বিষয়টি গোপন করা হয়েছে। সেখানে কলেজছাত্রী উত্তেজিত হলে ইউএনও তাকে থামতে বলে। পরবর্তীতে মনজুর হোসেন কলেজছাত্রীর মোবাইল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং মনজুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ও মেসেজ চ্যাটিং সকল আলামত ডিলিট করে দেয়। ইউএনও মনজুর হোসেন কলেজছাত্রীকে এ বিষয়ে কারও কাছে শেয়ার না করার অনুরোধ জানান এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কলেজছাত্রী বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেনের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আমাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখায় এবং তার সরকারি বাস ভবনে আমাকে নিয়ে যায়। সেখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও মনজুর হোসেন বিবাহিত হয়েও তিনি অবিবাহিত পরিচয় দিয়েছেন। আমি সরল মনে তার কথা শুনে বিশ্বাস করেছি। তিনি শুধু আমাকে ব্যবহারই করেছেন সামাজিকভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। বাংলাদেশে একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও আমার সাথে এরকম করতে পারেন এটা আমি কোনদিন বিশ্বাস করিনি। আমি আমার প্রাপ্য অধিকার চাই।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: শামীম আলম চ্যানেল 24 কে জানান গত ৩ এপ্রিল সদ্য যোগদানকৃত করিমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেন কে  জনপ্রশাসনের এক প্রজ্ঞাপনে মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে।