অভাবে ১ লাখ টাকায় সন্তানকে বিক্রি করলেন বাবা-মা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২ : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দুর্ঘটনায় আহত বাবা চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করতে নিজের শিশু সন্তান বিক্রি করে দিয়েছেন।

জোবায়েরা আক্তার মিনা নামের ১৩ মাস বয়সী ওই শিশু সন্তানকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন বাবা ও মা। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ধেররা-বিলওয়াই গ্রামের মো. বশির ও মা আছমা আক্তার নামে এক দম্পতি ঋণের টাকা পরিশোধ করতে ও চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটাতে নিজ সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন। সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর নোটারি, পাবলিকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজধানীতে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে সন্তানকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে দত্তক হিসেবে দেন। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
শিশুটির বাবা মো. বশির মুঠোফোনে জানান, বিগত ২০১৬ সালে সিএনজি চালিত স্কুটারের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না তিনি। এছাড়াও দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থতার কারনে আয় করতে পারছেন না।
তিনি আরও জানান, সাড়ে তিন বছর ও তের মাস বয়সী দুটি কন্যা শিশু রয়েছে তার। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার ক্রয় করতে পারছি না। এদিকে অসুস্থতার কারনে কাজও করতে পারছি না। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে হিসেবে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা দিয়েছে।
শিশুটির মা আছমা আক্তার জানান, মেয়ের জন্য পরান কান্দে। কিন্তু কি করবো, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোন কাজ করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পরা চলতো। এখন অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটাকে দত্তক দিয়েছি।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের একটি বিশেষ দল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। যাতে মেয়েটিকে উদ্ধার করা যায়। তাছাড়া দত্তক নেওয়ার কিছু আইনগত বিধানও রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।