ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),খুলনার ডুমুরিয়া প্রতিনিধি,শনিবার, ১২ মার্চ ২০২২ : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হেলে পড়া চার তলা ভবনটি সোজা করতে অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
ভবন সোজা করতে একপাশে খনন করা হচ্ছে ১৪ ফুট গভীর খাল। অন্য পাশে বাঁশের পাইলিং দিয়ে ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁধ। অভিনব এ পদ্ধতিতে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। তবে এ পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকর কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তিন সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল টিম ভবনটি পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেন। পরে ভনবটি হেলে পড়া রোধ করা ও সোজা করতে এ পদ্ধতিতে কাজ করতে ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী ভবনের সামনে (দক্ষিণ পাশ) এবং পশ্চিম পাশে মূল ভবনের কিছু অংশ বাদ রেখে ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট গভীর খাল খনন করা হচ্ছে। সেখান থেকে উত্তোলিত পচা (জোবা) মাটি বস্তায় ভরে ভবনের পিছন ও পূর্বপাশের ডোবা নালায় বাঁশের পাইলিং দিয়ে প্রায় ১২ ফুট চওড়া ও ১৪ ফুট উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ৩ মার্চ থেকে নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী কাজ শুরু করেছে।
জানা গেছে, ভবনটি যেখানে করার কথা ছিল, সেখানে নির্মাণ না করে কিছুটা সরিয়ে করা হয়েছে। তবে যেখানে করা হয়েছে- সেখানের সয়েল টেস্ট করা হয়নি। এছাড়া জায়গাটি বিল বা ডোবা হিসেবে থাকলেও বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের আগে তার স্থায়িত্ব নিয়েও ভাবা হয়নি। এসব কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে। এখন যেনতেনভাবে সেটি টিকিয়ে রেখে কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার বিল উত্তোলনের চেষ্টা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের বাস্তবায়নে ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের জন্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এর নির্মাণ ব্যয় ধর হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা।
খুলনার দৌলতপুরের এমএস রৈতি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। যার স্বত্বাধিকারী টিপু হাওলাদার। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিয়ে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত খুলনার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোহেল বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় লাগলেও ভবনটি পিছনে হেলে পড়া রোধ হয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে আসবে বলে আশা করছি।
অভিযোগ উঠেছে, কাজ সম্পন্ন করার নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের পেছনের (উত্তর) পাশ দেবে ভবনটি কিছুটা হেলে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। তারই প্রেক্ষিতে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম ভবনটি পর্যবেক্ষণ করেন।