যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২ : যমুনা রেলসেতু প্রজেক্টের নামে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার তৈরি করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছে একটি চক্র। তাদের ফাঁদে পড়ে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে অনেক ঠিকাদার এখন প্রায় নিঃস্ব। পুলিশ বলছে, বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৩০০ ঠিকাদারের কাছ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে চক্রটি। অভিযোগের ভিত্তিতে মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার রেল যোগাযোগ আরও সহজ করতে এবং ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগের জন্য গত বছর যমুনা সেতুর ওপর আলাদা বঙ্গবন্ধু রেলসতু উদ্বোধন করে সরকার। শুরু হয় মহাকর্মযজ্ঞ। আর এই সুযোগ কাজে লাগায় প্রতারকচক্র।

চক্রের মূলহোতা আলমগীর জাপানের ওবায়াশি করপোরেশনের কাছে থেকে ৩০০ কোটি টাকার সিএফটি বালি ভরাটের ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন বলে প্রচারণা চলান। টর্গেট সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায়। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে তাকদীর ইন্টারন্যাশনাল নামে খোলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অনলাইনে তাকদীর নামে খোলা হয় চ্যানেলও।

ব্যাপক প্রচারণার কৌশল হিসেবে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে সরবরাহকারীদের দেখানো হয় ব্রিজের বালি সরবরাহের নিজস্ব ডাম্পিং পয়েন্টের সাজানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। নিজেকে বড় মাপের কন্ট্রাক্টর প্রমাণে কোটি টাকা খরচ করে ঢাকার গুলশানে গড়ে তোলেন নিজস্ব অফিস। এক সিএফটি বালিতে ১০ টাকা লাভে বিভিন্ন জেলার সরবরাহকারীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় ৭ থেকে ৯০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

এক ভুক্তভোগী বলেন, সিকিউরিটি বাবদ ১৭ লাখ টাকা দিয়েছি। এ ছাড়া কমিশন বাবদ আরও ১৭ লাখ টাকা দিয়েছি। মোট ৩৪ লাখ টাকা দিয়েছি। আরেকজন বলেন, যারা ৫ কোটি নিয়েছে, তারা ১০ লাখ দিয়েছে। বিশেষ করে আমি ৫ কোটি নিয়েছি। তাই আমি ১০ লাখ টাকা দিয়েছি।

বালি ফেলার জন্য সরবরাহকারীরা প্রতারক আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হলে, অভিযোগ জানানো হয় সিআইডি পুলিশের কাছে। এরপর মূলহোতা আলমগীর একং আরও দুজনকে রাজধানীর খিলগাঁও ও গুলশান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন বলেন, কাউকে ২৫ লাখ, কাউকে এক কোটি, কাউকে ২ কোটি – এ রকম কাজি দিয়ে দিয়ে অগ্রিম নেওয়া শুরু করে চক্রটি। বলা হতো, প্রকৌশলীদের টাকা দিতে হবে। এ জন্য অগ্রিম টাকা লাগবে। এভাবে এলাকা থেকে বহু টাকা নিয়েছে।

এর আগেও ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে প্রায় ডজন খানেক মামলা রয়েছে আলমগীরের নামে।