প্রেমিকের প্ররোচণায় এরশাদ শিকদারের মেয়ের মৃত্যু, দাবি পরিবারের

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ০৬ মার্চ ২০২২ : এরশাদ শিকদারের মেয়ে জান্নাতুল নওরিন এশার (২২) সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের প্লাবন ঘোষ নামে একজনের প্রেম ছিল। প্লাবন ধর্ম পরিবর্তন করে এশাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্লাবন ধর্ম পরিবর্তনে অস্বীকৃতি জানানোয় এশা আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি এশার পরিবারের।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এশা। এ ঘটনায় এশার মা সানজিদা নাহার প্লাবন ঘোষের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে সানজিদা নাহার অভিযোগ করেন, এশাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন প্রেমিক প্লাবন।

এজাহারে সানজিদা নাহার বলেন, প্লাবন ঘোষের সঙ্গে আমার মেয়ে এশার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্লাবন মুসলিম হয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছিল। প্রেমের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে এশা মাঝে মধ্যে প্লাবনের সঙ্গে ঘুরতে যেত এবং তার বাড়িতেও যেত।

ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে অভিযোগনামায় সানজিদা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে প্লাবন এশা ও তার এক বান্ধবীকে আমাদের বাসার নিচ থেকে ঘুরতে নিয়ে যায়। এশার বান্ধবী আমাকে জানায়, ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে এশা ও প্লাবনের মধ্যে মোবাইলে কল আসাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে এশার বান্ধবী তাদের দুজনকে নিজের বাসায় নিয়ে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করে। তবে বিষয়টি সমাধান না হলে এশা বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে এশা তার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ফেলে। আমি তখন বাসায় ঘুমাচ্ছিলাম। পরে জানতে পারি, শুক্রবার ভোর ৫টা ২৪ মিনিটে প্লাবনের কাকা আমার মেয়ের বান্ধবীকে ফোন করে জানায়, এশার বাসায় যাও, সে পাগলামি করছে, আত্মহত্যার চেষ্টা করছে।

এরপর ভোর ৫টা ২৯ মিনিটে প্লাবন আমাকে ফোন করে জানায়, আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে। আমি তার ফোন পেয়ে দ্রুত রুমের দরজা খোলার চেষ্টা করি। কিন্তু রুম ভেতর থেকে লক পাই। পরে বাসার সিকিউরিটি গার্ড মেজবাহ, আলামিন ও এশার বান্ধবীর সহায়তায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখি, সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে।

এশার মা বলেন, সিকিউরিটি গার্ডদের সহায়তায় আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সকাল সাড়ে ৮টায় জানায় এশা মারা গেছে।

এজাহারে ভিকটিমের মা অভিযোগ করে বলেন, আমি পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি, তারা ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল প্লাবন। এজন্য সে কৌশলে এশার সঙ্গে ঝগড়া বাধায় এবং ইচ্ছে করে এশাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। সে এশাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।

গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে গতকাল রাতে এশার মা মামলা দায়ের করেছেন।