জাতীয় চার নেতার জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন খায়রুজ্জামান

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন বলেন, দেশের আইন অনুযায়ী হাইকমিশনার খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরপর থেকেই আলোচনায় সাবেক রাষ্ট্রদূত খায়রুজ্জামান। কে তিনি, কী তার পরিচয়-এ নিয়ে চলছে জোর কানাঘুষা। এই ব্যাপারে সামান্য প্রয়াস চালানো হলো।

খায়রুজ্জামান ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সেনা কর্মকর্তা। মেজর হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। কুখ্যাত জেলহত্যা মামলার আসামি ছিলেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামান কারাগারে নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক তারা। তাদের হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন খায়রুজ্জামান।

জেল হত্যার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে কায়রোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৭৬-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৯৬ সালে দেশের ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এসেই খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার।  একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে অবসরে পাঠায় তারা।

এরই মাঝে ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন খায়রুজ্জামান। ২০০১ সালে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আসে। সেবার ক্ষমতায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। এতে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

২০০৩ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক হিসেবে পুনর্বহাল হন খায়রুজ্জামান। ২০০৪ সালে বিচারিক আদালতে জেল হত্যার অভিযোগ থেকে খালাস পান তিনি। পর অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পান।

২০০৫ সালে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন খায়রুজ্জামান। এরপর ২০০৭ সালে পূর্ণাঙ্গ সচিব পদে পদোন্নতি পান। পরে প্রথম শ্রেণির রাষ্ট্রদূতের পদমর্যাদা ও মর্যাদাসহ মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন।

২০০৯ সালে ফের বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এবার খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা বলে কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থায় (ইউএনএইচসিআর) আবেদন করেন। পরে ইউএনএইচসিআরের পরিচয়পত্র পান। এরপর উদ্বাস্তু হিসেবে দেশটিতে প্রায় এক দশক ধরে বসবাস করছিলেন।

প্রসঙ্গত, জিয়াউর রহমান সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী প্রয়াত মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জামাতা খায়রুজ্জামান। যাদুর ছোট কন্যা রিটা রহমানের স্বামী তিনি।