ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি,শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২২ : ফাঁসির দণ্ড পাওয়া কয়েদি নূর হোসেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের (২) কনডেম সেলে বসে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলতেন, সমকালের এই অনুসন্ধানের সত্যতা পেয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সমকালের প্রথম পাতায় ‘জেল থেকে বলছি …’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর কারা কর্তৃপক্ষ নূর হোসেনের কনডেম সেলে অভিযান চালায়। এ সময় নূর হোসেনের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়। সেটি ছিল ছোট আকারের বাটন মোবাইল ফোন। পরে তার পায়ে পরিয়ে দেওয়া হয় ডান্ডাবেড়ি।
এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে কারারক্ষীদের কে কে জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের (২) সিনিয়র জেল সুপার এমএ জলিল বলেন, সমকালের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আমরা নূর হোসেনের সেলে অভিযান চালিয়ে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করেছি। এজন্য কারাবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি। এ মামলার রায়ে তাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মামলাটি উচ্চ আদালতের সুপ্রিম কোর্ট বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
দেশজুড়ে তোলপাড় :গতকাল সমকালে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জ নগর, নূর হোসেনের নিজ এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জসহ দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। সকালের মধ্যেই সমকালের সব কপি বিক্রি হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠক সমকাল না পেয়ে ঢাকা থেকে সংগ্রহ করেন।
এদিকে এ সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নূর হোসেনের ছোট ভাই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নূর উদ্দিন। স্থানীয় একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পত্রিকা স্টলগুলো থেকে নূর উদ্দিনের ছেলে রাফিম সমকালের যে কপিগুলো অবিক্রীত ছিল সেগুলো কিনে নেন।
সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঢাকা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ এসে অনেক গণমাধ্যমকর্মী নূর উদ্দিনের বাড়িতে ভিড় করেন। তবে তাদের কারোর সঙ্গেই কথা বলেননি তিনি।
প্রয়োজনমতো ফোন আসত কারাগার থেকে :এদিকে আসন্ন নাসিক নির্বাচন সামনে রেখে নূর হোসেন কারাগারের কনডেম সেলে বসেই ভাই-ভাতিজার জন্য ভোট চাচ্ছেন- এমন খবর সমকালে প্রকাশের পর চমকপ্রদ আরও খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, ভোটের মাঠে যখন যাকে প্রয়োজন হতো সেই চাহিদা নূর উদ্দিন ফোন করে কারাগারে থাকা নূর হোসেনকে জানাতেন। এরপরই নূর হোসেন কারাগার থেকে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ফোন দিতেন। দিতেন নানা রকম নির্দেশনা।
নেতিবাচক ইমেজের কারণে আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নূর হোসেনের ভাই নূর উদ্দিন ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ভাতিজা শাহজালাল বাদলের পাশে কেউ নেই। যারা আছেন তারা ভয়ে আছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দুটি ওয়ার্ড থেকে ভাই-ভাতিজা প্রার্থী হওয়ায় বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখছেন না এলাকাবাসী।