ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আদালত প্রতিনিধি,বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ : ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন ইলমা চৌধুরী মেঘলা। বিয়ের পর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে পড়াশোনা বন্ধ করতে বলেন। ইলমা তা না মানায় প্রথমে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসামিরা। পরে তাকে হত্যা করে তারা।’
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে স্বামী ইফতেখার আবেদীনের রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একথা বলা হয়। এদিকে শুনানি শেষে আদালত ইফতেখার আবেদীনের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. সালাউদ্দিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, ‘ইফতেখার আবেদীনে এজাহারনামী এক নম্বর আসামি। এজাহারনামীয় সহযোগী দুই ও তিন নং আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলার ভিকটিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। বিয়ের পর আসামিরা ভিকটিমকে পড়াশোনা করতে নিষেধ করে। ভিকটিম একথা না মানায় তার চুল কেটে দেয়। তারপর তাকে হত্যা-ই করলো।
আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভিকটিমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বিদ্যমান। দেখলেই বোঝা যাচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর জানা যাবে তাকে কতটুকু গুরুতর আঘাতের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।’
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘ইফতেখার আবেদীন মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনা শেষে কানাডায় দেড় বছর চাকরি করছেন। পারিবারিকভাবে ইলমার সাথে তার বিবাহ হয়। তাদের মধ্যে হৃদ্যতা ছিল ভালো। কানাডায় নিয়ে যাবেন এজন্য স্ত্রীকে প্রস্তুতিও নিতে বলেন। কোনো ষড়যন্ত্র থাকলে তিনি স্ত্রীকে কানাডা নিয়ে যেতে চাইতেন না।’
তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সাথে ইফতেখার জড়িত না। জড়িত থাকলে তো স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেন না বা তার পরিবারকে অসুস্থতার খবর দিতেন না। বরং তিনি পালিয়ে যেতেন। ভিকটিম ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার ও কর্মজীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। সব সময় সে মানসিকভাবে ভেঙে থাকতো। ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার গঠনে ব্যর্থ বা বিদেশ যেতে না পারার কারণে হয়তো তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তাকে হত্যা করা হয়নি। বরং তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ অবস্থায় আসামির রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন প্রার্থনা করছি।’
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।