স্বামীর কণ্ঠ নকল করে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২১ : লক্ষ্মীপুরে গভীর রাতে ভাড়া বাসা থেকে চোখ-মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারমিন (২২) নামে এক গৃহবধূকে ধানক্ষেতে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে কমলনগর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এসময় ওই গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে জ্ঞান ফিরলে আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূ ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

পরদিন সকালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
জানা গেছে, আহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আহত ওই গৃহবধূ দুই সন্তানের জননী। এদিকে ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও স্বজনরা জানায়, কমলনগর উপজেলার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন জেলে দম্পতি। নদীতে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ায় এখানে ভাড়া ঘরে থাকেন তারা। জীবিকার তাগিদে স্বামী মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে গেলে বুধবার দুই সন্তান নিয়ে একাই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি।
রাত আনুমানিক ২টার দিকে হঠাৎ একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে তার স্বামীর কণ্ঠ নকল করে দরজা খুলতে বলে। দরজা খোলার পর দুর্বৃত্তরা ওই গৃহবধূর চোখ-মুখ বেঁধে বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে একটি ধানক্ষেতে নিয়ে যায়। এসময় তাকে বেদম মারধরসহ নির্যাতন করে ধর্ষণচেষ্টা করে তারা (দুর্বৃত্তরা)।

এক পর্যায়ে নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূ অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে ওই ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। রাত তিনটার দিকে ওই গৃহবধূ জ্ঞান ফিরলে রক্তাক্ত ও অর্ধ-বিবস্ত্র অবস্থায় পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় সে।
খবর পেয়ে সকালে স্বজনরা এসে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল খালেকের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে কমলনগর থানায় মামলা করলে সন্দেহভাজন একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বুধবার (০১ ডিসেম্বর) সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় এক গৃহবধূকে হাসপাতালে আনলে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে একজন অফিসার ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিমকে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া জড়িতদের ধরতে আমাদের পুলিশি তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।