ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ : অবৈধ দখল আর অপরিকল্পিত খননে দিনদিন ছোট হচ্ছে কর্ণফুলী নদী। গত ৬ বছরে প্রশস্ততা কমেছে ৪০০ মিটার। নদীর বুকে পলি জমে তৈরি হয়েছে অসংখ্য চর। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালে কিছু অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করলেও নানা জটিলতায় তাও থমকে গেছে।
বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলী নদীর বুকে জেগেছে চর। পাড় দখল করে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। তৈরি হচ্ছে বালুর মহাল। ফলে প্রতিনিয়ত ছোট হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা। বদলে যাচ্ছে গতিপথ। কমছে নাব্য।
স্থানীয়রা বলেন, গার্মেন্টসের বা প্রতিটি বাসার ময়লা আবর্জনা এখানে পড়ছে। এতে করে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান জানান, কর্ণফুলী যেভাবে ভরাট হচ্ছে, যেভাবে কর্ণফুলী দূষণ হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য হতাশাজনক। আমরা দেখি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার উদ্যোগ নেওয়া হয়, কিন্তু এ উদ্যোগ মাঝ পথে থেমে যায়। এক্ষেত্রে সরকারের শক্ত অবস্থান আমরা আশা করছি।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের এক জরিপ বলছে, ২০১৪ সালে শাহ আমানত সেতু এলাকায় কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ত ছিল ৮৮৬ মিটার। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৫১০ মিটারে। চাক্তাই খালের মুখে প্রশস্ত ৮৯৮ থাকলেও কমে এখন ৪৩৬ মিটারে। ভরে গেছে ২০ শতাংশ নদীর তলদেশ। এ অবস্থায় আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার ঘোষণা নদী সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, কর্ণফুলিতে প্রায় ২১০০ থেকে ২২০ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এগুলো উচ্ছেদের জন্য আমরা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। এছাড়া প্রয়োজন পড়লে আমরা হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা চাইব।
নদী গবেষকদের মতে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ণফুলী দখলের কারণে কমছে নদীর প্রশস্ততা। অপরিকল্পিত খনন ও তলদেশে পলিথিনের স্তরও এর জন্য দায়ী।
নদী গবেষক মো. ইদ্রিস আলি জানান, এই নদীটা তলদেশ থেকে ভরে উঠছে। তিনি আরও জানান, আমাদের এক পরিসংখ্যান এমন যে নদীর প্রায় ২০ শতাংশ তলদেশ ভরে গেছে।
হাইকোর্টের এক নির্দেশে ২০১৯ সালে ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১০ একর ভূমি উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন। এখনো ১৯৫১টি অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে।