ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),পঞ্চগড় প্রতিনিধি,রোববার, ০৭ নভেম্বর ২০২১ : উত্তরে হিমালয় কাছে হওয়ায় পঞ্চগড়ে বরাবরই শীতের প্রকোপ একটু বেশিই থাকে। শীতকালে বেশির ভাগ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে এ জেলায়। এবারও আগেভাগেই শীত পড়েছে এখানে। বেশ কিছুদিন ধরে অনুভূত হচ্ছে শীত। হিমালয় থেকে আসা হিমেল হাওয়া সেইসঙ্গে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা পড়ে থাকে পুরো জেলা। সন্ধ্যা নামলেই গায়ে জড়াতে হচ্ছে গরম কাপড়। ফলে শীত নিবারণে এ জেলার মানুষের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। অনেকেই তৈরি করছেন নতুন লেপ-তোষক। ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।
জেলার হাড়িভাসা, জগদল, টুনিরহাট, ভজনপুরসহ বিভিন্ন হাটবাজার ও পঞ্চগড় পৌরশহরের লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মালিক-শ্রমিক সবাই লেপ-তোষক তৈরি, সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আকার ও তুলা ভেদে বিভিন্ন দামে লেপ-তোষক বিক্রি করা হচ্ছে। শিমুল তুলার দাম বেশি হওয়ায় একেকটি লেপ/তোষক বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায়।
দোকানিরা বলেন, ‘বছরের প্রায় আট মাস তেমন কাজ হয় না। এখন শীতকালে কাজের সুযোগ বেশি, আয়-ইনকামও বেশি। তাই চার মাসের কাজের পারিশ্রমিক দিয়ে বাকি আট মাস চলতে হয়। ’
মৌসুমে একেকজন কারিগর দৈনিক ৬/৭টি লেপ-তোষক তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি লেপ আকার ভেদে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা, তোষক ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা এবং জাজিম ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করা যায়। প্রতিটিতে পারিশ্রমিক আসে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর তৈরি লেপ-তোষকের দাম তুলনামূলক বেশি বলে দাবি ক্রেতাদের।
হাবিবা আক্তার হিমু নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘এবারে কিছুটা আগে ভাগেই শীত পড়তে শুরু করেছে। তাই লেপ-তোষক তৈরি করতে বাজারে এসেছি। তবে তুলার দাম খানিকটা বেশি চাচ্ছেন দোকানিরা।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘কাপড় ও তুলার দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ-তোষকে গুণতে হচ্ছে বেশি দাম।’
আনারুল ইসলাম নামের এক কারিগর বলেন, ‘বছরের মধ্যে শীতের দুই থেকে তিন মাস আমাদের ব্যবসার মৌসুম। এই সময়ে লেপ তোষক বিক্রিও যেমন বাড়ে তেমনি আমাদের ব্যস্ততাও বাড়ে। শীতের শেষে অলস সময় পার করতে হয় আমাদের।’
তুলা ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের এলাকায় শীত শুরু হয়েছে। ভিড় বাড়ছে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে। এ বছর তুলার দাম প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে, কাপড়ে বেড়েছে গজে ৫-৬ টাকা।
এখন পর্যন্ত শীতের তীব্রতা খুব বেশি অনুভূত না হলেও ক্রমশ কমছে তাপমাত্রা। গত ১০ দিনের ব্যবধানে পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। দিন দিন তাপমাত্রা আরো কমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।