বিমানবন্দরে পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার অপকর্মে সৌদি প্রবাসীর জেল (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,রোববার, ০৩ অক্টোবর ২০২১ : ঢাকা বিমানবন্দরে পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার অপকর্মে সৌদি প্রবাসী এক বাংলাদেশিকে ২০ বছরের জেল দিয়েছেন দেশটির আদালত। সাত মাস আগে ঢাকা থেকে সৌদি গিয়ে প্রায় ৫ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন আবুল বাশার নামে ওই প্রবাসী। সৌদি প্রবাসী ভুক্তভোগী চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে জানান, বিমানবন্দরে আচারের কথা বলে টিফিন বক্সে ইয়াবা দেন ওই কর্মকর্তা।

আবুল বাশার। ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। চলতি বছর মার্চের ১২ তারিখ ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে রওনা দেন জেদ্দার উদ্দেশে।  বিমানে ওঠার আগে যখন তিনি বোর্ডিং পাস নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে, তখন বিমানবন্দরের কর্মকর্তা পরিচয়ে এক ব্যক্তি তাকে একটি টিফিন বক্স দেন। সৌদিতে থাকা তার ছোট ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

প্রথমে নিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে পরে ভয়ভীতি দেখানোয় তা নিয়ে যান ওই প্রবাসী। জেদ্দায় পৌঁছলে তল্লাসিতে ধরা পড়ে ওই বক্সে আচার নয়, ছিল ৪ হাজার ৯৮০টি ইয়াবা। সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

ঘটনার ২১ দিন পর পুরো বিষয় টেলিফোনে স্ত্রীকে জানান আবুল বাশার। স্থানীয় জেল কোড অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে একদিন পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

তার স্ত্রী জানান, প্রথম দিন উনি ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করেন। এক মিনিটের বেশি কথা বলতে পারেননি। তার সম্পূর্ণ ঘটনা শুনতে শুনতে আমাদের এক মাস সময় যায়। ও বলছে গত রোববার ওকে কোর্টে ওঠানো হয়েছে। আদালত তাকে ২০ বছরের সাজা দিয়েছে। আমি এখান থেকে যে এত কষ্ট করলাম, এত জায়গায় দৌড়ালাম, এত কিছু করলাম। আজ আমার স্বামী বিনা অপরাধে, বিনা দোষে সাজা হয়ে যাবে-এটা কেউ কোনো দিন মানতে পারে?

কিভাবে বিপদে পড়লেন তা জানিয়ে আবুল বাশার বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায়-অপরাধ করিনি। আমি উপকার করতে গিয়ে ভুল করেছি।’

স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগের সত্যতা মেলায় গ্রেপ্তার করা হয় বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান একে ট্রেডার্সের সুপারভাইজার নূর মোহাম্মদকে।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা একটা অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করেছি। তিনি স্বীকার করেছেন, এ ধরনের একটা কাজ  করেছেন।’

সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কন্স্যুলার আমিনুল ইসলাম জানান, আবুল বাশার যে ঘটনার শিকার তা দেশটির কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুনানি শেষে গেল ২৬ সেপ্টেম্বর আদালত ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন তাকে। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আপিল করা হবে।

সৌদি আদালত বাশারের বিষয়ে হয়তো নতুন কোন রায় দেবেন। তবে আক্ষেপের অশ্রুতে তার স্ত্রীর অপেক্ষা নিজ দেশের রায়েরও। যেখানে শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড়াবে মূল অপরাধীরা।