নাটোরে নির্যাতিত শিশু উদ্ধার, মাদ্রাসা প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৩

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নাটোর প্রতিনিধি,শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১ : নাটোরে ১১ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে নির্যাতন ও শরীর ঝলসে দেওয়ার পর পাঁচ দিন ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন।

পুলিশ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মাদ্রাসা প্রধান ও তার স্ত্রীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার চর লক্ষিকোল গ্রামের ইমরান ইসলামের ১১ বছর বয়সী মেয়ে ইয়াসমিনকে হাফেজি পড়ার জন্য পার্শ্ববর্তী উলুপুর এলাকার তালেমুন নিছা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকেই শিশুটির ওপর কথায় কথায় চালানো হত নির্যাতন। করানো হত মাদ্রাসার প্রধানের বাড়ির কাজ।

নির্যাতিত শিশু ইয়াসমিন জানায়, ২৪ সেপ্টেম্বর সে ভাত রান্না করে ভাড়ি পাতিল তুলতে গিয়ে পড়ে যায়। এতে ক্ষুদ্ধ মাদ্রাসা প্রধানের স্ত্রী সালমা বেগম ওই ছাত্রীকে চুলের মুঠি ধরে গরম ভাত ও ভাতের মারের মধ্যে ফেলে দেয়। এতে তার বাম হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। ওই অবস্থায় কাউকে না জানিয়ে তাকে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে দেওয়া হয়। এতে তার ঝলসে যাওয়া ক্ষত অংশে পচন ধরতে শুরু করে।

শিশুটির খালু জানান, খবর পেয়ে বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসায় গিয়ে তারা ইয়াসমিনকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে তালা ভেঙ্গে ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মাদ্রাসার শিক্ষক আব্বাস শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসার প্রধান তাকে ফোন করে ইয়াসমিনের শরীর ঝলসে যাওয়ার বিষয়টি জানান। তিনি মাদ্রাসার প্রধানকে ওই শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বললেও তিনি করেননি।

তবে মাদ্রাসার প্রধান সোহরাব শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তাকে তালবদ্ধ করে রাখা হয়নি।

নাটোর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাদাদ বলেন, এই ঘটনায় নির্যাতিত শিশুর বাবা ইমরান বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদ্রাসার প্রধান সোহরাব, তার স্ত্রী সালমা বেগম ও মাদ্রাসার অপর শিক্ষক বাবুলকে অভিযুক্ত করে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন। সন্ধ্যায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।