ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নির্বাচন প্রতিনিধি,সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ : রাত পোহালেই শুরু হবে প্রথম ধাপের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এছাড়াও দেশের ৯টি পৌরসভা এবং স্থানীয় সরকার পরিষদের কয়েকটি উপ-নির্বাচনও এদিন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের ৪৪ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। তবে নির্বাচনী এলাকায় কোনো সাধারণ ছুটি থাকছে না।
এদিকে ১৬১ ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় একটিতে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী টহলে রয়েছে। তবে রাজনীতির মাঠে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এ নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ায় নির্বাচন খানিকটা নিরুৎপাত হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কোন কোন ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও মেম্বার প্রার্থীদেও মধ্যে জোর লড়াই হতেও পারে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহলে রয়েছে, মাঠে কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিট্রেট। সোমবার অনুষ্ঠিতব্য ১৬১টি ইউপির মধ্যে ১২টি ইউপি, ৯টি পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য যেসব নির্বাচন হচ্ছে সেগুলোতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
এদিকে স্থানীয় সরকারের এসব ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হলেও এলাকায় ছয়লাব ব্যানার ফেস্টুন। চায়ের দোকান থেকে শপিংমল সর্বত্র ভোটের উত্তাপ। ভোট নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে চাপা উত্তেজনাও কাজ করছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্খা করছেন সাধারণ ভোটাররা। উত্তেজনা প্রবণ এলাকায় টহল দিচ্ছে র্যাব, বিজিবি, আর্মড ফোর্স, কোস্টগার্ডসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ৪৩ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মাঠের রাজনীতির প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ইউপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ীর প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে বাগেরহাট, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৪৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে বাগেরহাটের ৬৬টি ইউপির মধ্যে ৩৮টিতে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন না। অন্যগুলোতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোটে লড়ছেন।
বাগেরহাটের বাইরে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ৪টি এবং খুলনার ১টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। গত ৩ মার্চ প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউপির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোট স্থগিত করা হয়। সোমবার দেশের ৬টি জেলার ২৩টি উপজেলার ১৬১টি ইউনিয়নে ভোট নেয়া হবে। ১৬৭টি ইউপির ভোট স্থগিত হলেও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মৃত্যুজনিত কারণে পাঁচটি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভোট এ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত হবে না বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, প্রথমধাপে দেশের ১৯টি জেলার ৬৪টি উপজেলার ৩৭১টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১১ এপ্রিল এসব নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে ওই নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে গত ২১ জুন স্থগিত ইউপির মধ্যে ২০৪টির ভোটগ্রহণ করা হয়। সোমবার ২০ সেপ্টেম্বর হবে ১৬১টি ইউপির। দেশে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদেও মধ্যে ইতোমধ্যে মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়া হাজার খানের ইউপিতে ডিসেম্বরের মধ্যে এবং বাকিগুলো কয়েক ধাপে ভোট নেয়া হবে বলে নির্বাচন কমিশন আগেই ঘোষণা করেছে।