ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট ২০২১ : কয়েক বছর ধরেই চলচ্চিত্রে সংকটকাল চলছে। করোনার কারণে সেই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এফডিসিতে এখন আর অতীতের মতো ক্যামেরা, লাইটের আলোর ঝলকানি চোখে পড়ে না। বেকার সময় পার করছেন নির্মাতা, শিল্পীসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা। এই দুঃসময়ে পরীমনির ঘটনা তাদের আরো দ্বিধায় ফেলেছে। এফডিসি পাড়ায় এখন একটাই প্রশ্ন- কবে ছাড়া পাচ্ছেন পরীমনি? বিশেষ করে সাংবাদিক দেখলেই তারা জানতে চাচ্ছেন এ বিষয়ে।
গত ১৫ আগস্ট এফডিসির ২ নম্বর শুটিং ফ্লোরের সামনে অভিনেত্রী ভুলু বারীসহ কয়েকজন এক্সট্রা শিল্পী বসে ছিলেন। সাংবাদিক দেখেই তাদের প্রথম প্রশ্ন- মামা পরীমনি কবে ছাড়া পাবে? তাদের এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা নেই এই প্রতিবেদকের। উত্তর না পেয়ে অনেকেই মন খারাপ করলেন। অনেকে খুলে বসলেন স্মৃতির ঝাঁপি। পরীমনি কখন, কবে তাদের সহযোগিতা করেছে বললেন অনেকে। অনেক কথার ভিড়ে হঠাৎ ভুলু বারী বললেন, ‘পরীমনিকে ছাড়িয়ে আনতে টাকার দরকার হলে আমিও টাকা দিতে চাই। মানুষের কাছে হাত পেতে হলেও টাকা জোগাড় করুম।’
আপনি পরীমনিকে টাকা দিতে চান কেন? প্রশ্ন করতে দেরি হলেও উত্তর পেতে দেরি হলো না। ‘আমার উপকার করেছে পরীমনি। আমি নামাজ পরে তার জন্য দোয়া করি। আমার মেয়েকেও বলেছি নামাজ পরে দোয়া করতে।’ বলেন ভুলু বারী।
কথাপ্রসঙ্গে জানা গেল গত ৫ জুলাই ভুলু বারীর বাসায় খাবার না থাকায় দশ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন পরীমনি। এই চিত্রনায়িকার এমন সামাজিক কর্মকাণ্ডে খ্যাতি রয়েছে এফডিসিতে। তাকে বিভিন্ন সময় অনাথ শিশুদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। অসচ্ছল শিল্পীদের তিনি নীরবে সহযোগিতা করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। প্রতি বছর দুস্থ শিল্পীদের জন্য পরীমনির গরু কোরবানির কথা অনেকেরই জানা।
এর মধ্যেই এফডিসির পাশে চায়ের দোকানে জমে উঠেছে বিনোদন সাংবাদিকদের আড্ডা। অভিনেত্রী রাত্রী সেই আড্ডায় যোগ দিয়েই পরীমনির প্রসঙ্গ তুললেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী পরীমনি অসহায় শিল্পীদের জন্য নীরবে অনেক কিছু করেছেন। ‘এফডিসিতে কেউ কোনো দিন কোরবানি দেয়নি। পরীমনি প্রথম শুরু করেন। মাংসের জন্য আমাদের মানুষের কাছে এখন আর হাত পাততে হয় না।’ বলেন রাত্রী।
গ্ল্যামার আর সিনেমার ঝলমলে জীবনের বাইরে পরীমনির মানবিক একটি মন রয়েছে উল্লেখ করে রাত্রী বলেন, ‘গত ঈদেও পরীমনি একসঙ্গে ৬টি গরু কোরবানি দিয়েছেন সিনেমাসংশ্লিষ্ট সামর্থ্যহীন মানুষের জন্য। পরী চাইলে কেবল অর্থ দিতে পারতেন, কিংবা গরু কিনে পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু না, প্রতি বছরই তিনি এফডিসিতে গিয়ে নিজের হাতে কোরবানির মাংস বণ্টন করেন। চলচ্চিত্রের সবাই এ জন্য পরীমনির প্রশংসাও করে।’
পাঁচতারকা হোটেলে পরীমনির জন্মদিনের জমকালো পার্টির খবর প্রকাশ্যে এলেও এই বিশেষ দিনের একটি সময় পরীমনি কাটান অনাথ শিশুদের সঙ্গে। কয়েকদিন আগেও ‘হোপ ফর চেঞ্জ ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার সুবিধাবঞ্চিত অন্তত ৫০০ শিশুর জন্য সহায়তা দিয়েছেন পরী।