ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আদালত প্রতিনিধি,০৮ ফেব্রুয়ারি : ৯ বছরের সংসারে রয়েছে দু’টি সন্তান। অথচ স্ত্রী অপহরণের মামলায় স্বামীকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সন্তান নিয়ে বার বার আদালতে চক্কর কাটছেন স্ত্রী। আইনজীবীরা বলছেন, রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক মনোভাব প্রয়োগ করা হয়নি।
প্রথম স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে ঘর ছাড়েন বরগুনার ফাতিমা। কিছুদিন পর স্বামীকে তালাক দেন তিনি। বিয়ে করেন শাহ আলমকে। ৯ বছর ধরে সুখে শান্তিতেই ছিলেন তারা। আরাফাত ও আরিয়ান নামে ৭ ও ৫ বছরের দুটি সন্তান রয়েছে তাদের।
ফাতিমা যখন দ্বিতীয় বিয়ে করেন তখন প্রাক্তন স্বামী তার স্ত্রীকে অপহরণের মামলা করেন শাহ আলমের বিরুদ্ধে। সেই মামলার বিচার চলেছে ৯ বছর ধরে। একাধিকবার ফাতিমা আদালতে গিয়ে বলেছেন, দ্বিতীয় স্বামী শাহ আলম তাকে অপহরণ করেননি। কিন্তু কে শোনে কার কথা।
দীর্ঘ শুনানি শেষে স্ত্রীকে অপহরণের দায়ে স্বামী শাহ আলমকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। অপহরণে সহযোগিতার দায়ে আরও ৭ জনকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ফাতিমা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, ‘আমাকে শাহ আলম অপহরণ করে নাই। শাহ আলমকে আমি মাস খানেক আগে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। ২০০৭ সালে জাকিরের সঙ্গে বিয়ে হয়। জাকিরের অত্যাচারের অতিষ্ঠ হয়ে শাহ আলমকে বিয়ে করি। জাকিরকে ৪/৫ মাস পূর্বে তালাক দেই। সে এখন আর আমার স্বামী নয়। আমাকে কেউ অপহরণ করে নাই।’
যাকে অপহরণ নিয়ে এত কাহিনী, তিনি জবানবন্দি দেয়ার পরও কেন এমন রায়? প্রশ্নের উত্তরে আসামির আইনজীবী জানান, এ মামলায় বিচারিক মনোভাব দেখাননি বিচারক।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ‘অপহরণ মামলার মূল বিষয়বস্তু হলো ২২ ধারার জবানবন্দি। ২২ ধারার জবানবন্দিতে ভিকটিম কি বলল, এটাই মূল আলোচ্য বিষয়। এবং ভিকটিমের বয়স ২৭ বছর তার মানে ভিকটিম এডাল্ট। ভিকটিম এসে আদালতে বলছে যে, ‘আমি অপহৃত হয়নি। আমি স্বেচ্ছায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।’ তাহলে সেখানে আর কিছু থাকার কথা না। এ মামলায় অনিবার্যভাবে খালাস দেওয়া ছাড়া আর কোনো অপশনই থাকার কথা না।’
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) শাহ আলমের জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে উচ্চ আদালত।