ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,১৫ ডিসেম্বর : ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রামে। ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে লড়াই শুরু হয় পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। সে সময় বাংলাদেশের অভ্যুদয় রুখে দিতে পাকিস্তান গঠন করে কুখ্যাত আলবদর বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের পর রাজশাহী শহরে আলবদর বাহিনীর ডিভিশনাল ইউনিটের একটি পরিত্যক্ত সদর দপ্তর থেকেই উদ্ধার করা হয় পাকিস্তানি সামরিক প্রশাসনের একটি চিঠির সঙ্গে আলবদর বাহিনী গঠনের প্রস্তাবনার সাইক্লোস্টাইল করা অনুলিপি।
রাজশাহী নগরীর রানী বাজারে পণ্ডিত অমরেস দাস চৌধুরীর বাড়ি “মোহিনী নিকেতন” দখল করে নেয় আলবদর বাহিনী। এরপর এখানেই তাদের ডিভিশনাল ইউনিটের ক্যাম্প গঠন করে। রাজশাহী নগরীর মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংবাদিক আহমেদ শফি উদ্দিন যুদ্ধ শেষে এই ক্যাম্প থেকেই আলবদর গঠনের এসব অনুলিপি উদ্ধার করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন এ সাংবাদিক তৎকালীন সাপ্তাহিক সোনারদেশ পত্রিকার চিফ রিপোর্টার ছিলেন। বর্তমানে সে পত্রিকাটি একই নামে স্থানীয় দৈনিক হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে। ১৯৭০ সালে প্রথম এ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান।
এই যুদ্ধসাংবাদিক জানান, নথিতে উল্লেখ আছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের কাছে বলেছিলেন “পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মীরা যারা দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে এবং যারা অনুগত, আন্তরিক ও সৎ পাকিস্তানি, তারা এই দুঃসময়ে সর্বোত্তমভাবে জাতির সেবা করতে প্রস্তুত।” পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সময় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের (আইসিএস) সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয় রুখে দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় আইসিএসের সদস্যদের নিয়ে কুখ্যাত আলবদর বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল।
রাজশাহীর এই যুদ্ধসাংবাদিক আহমেদ শফি উদ্দিন বলছেন, ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজশাহী শহরের রানিবাজার এলাকায় অবস্থিত সাপ্তাহিকের অফিসটি ভাঙচুর করেছিলেন। একই সঙ্গে পত্রিকার সকল সাংবাদিকদের মৃত্যুর পরোয়ানা ঘোষণা করেছিল। সে সময় সাংবাদিকরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শহরে ফিরেই এই নথি খুঁজে পান তিনি।
তিনি বলছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজশাহী শহরে ফিরে যুদ্ধের প্রমাণসমূহ বিভিন্ন স্পট থেকে নথি সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরে রানী বাজারের আলবদর বাহিনীর মোহিনী নিকেতন ক্যাম্পের একটি কুয়োয় একটি ব্যাগ দেখতে পেয়ে তার চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় সেটি উদ্ধার করেন। পরে ব্যগটিতে পাওয়া যায় আলবদর নেতাদের দুই হাজার পৃষ্ঠার নথি। সেটি গবেষণার জন্য তুলে দেন মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে। এর কপি রেখে দেন নিজের কাছে।
দিন, তারিখ ও স্বাক্ষরহীন ইংরেজিতে লেখা এসব নথিপত্রে আলবদর বাহিনী গঠনের পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা ছিল। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে শত্রু ও দুর্বৃত্ত বলে অভিহিত করে তাদের নির্মূল করার লক্ষ্যে আলবদর বাহিনীর কর্মপরিকল্পনা, উদ্দেশ্য ও তৎপরতা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
নথিতে উল্লেখ আছে, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের আইসিএসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিল। আলবদর গঠনে তিনি “ইসলামী জামিয়াত-ই-তালাবা পাকিস্তান” নামে উল্লেখ করতে বেশি পছন্দ করেছেন। আলবদর গঠনের চিঠিতে মুজাহিদ জোর দিয়ে লিখেছেন, কেবলমাত্র আইসিএসের পরীক্ষিত কর্মীদেরই আলবদর স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হোক।
‘আলবদরে কেবল মাত্র সেই পরীক্ষিত কর্মীদেরকে নিয়োগ করবেন যারা এমনকি তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও পাকিস্তানের অখণ্ডতার জন্য কাজ করবে। আলবদর কর্মীদের সংখ্যার চেয়ে তাদের মানের দিকে খেয়াল রাখবেন,’ লেখা ছিল সে নথিতে।
এ যুদ্ধ সাংবাদিক আরও বলছেন, মুজাহিদ প্রস্তাব করেছিলেন, এই আলবদর বাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ‘দুর্বৃত্তদের’ বাছাই এবং জিজ্ঞাসাবাদ করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। তিনি আলবদর বাহিনীকে পাকিস্তানি হানাদারদের অন্যান্য সহযোগী সংগঠন, রাজাকার ও মুজাহিদ বাহিনীসমূহের পদমর্যাদার উপরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি লিখেছেন, ওই সংগঠনগুলো সুবিধাবাদীদের দ্বারা দূষিত ছিল।
নথিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘রাজাকার ও মুজাহিদদের উপরে স্বেচ্ছাসেবীদের একটি নতুন দল সংগঠিত করা যেতে পারে, যার বেশিরভাগই হবে ছাত্র। অবশ্যই, ছাত্র নয় এমন যুবকদের মধ্যে যারা বুদ্ধিমান ও সৎ তাদেরকে এ বাহিনীর অধীনে রাখা যেতে পারে। তবে তাদের ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের অধীনে থাকার মানসিকতা থাকতে হবে।’
মুজাহিদের প্রস্তাবনা পাকিস্তান ও সেনাবাহিনীর প্রতি আইসিএসের আনুগত্যের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়। তিনি সেখানে আলবদর বাহিনীকে এতটা শক্তিশালী ও সাহসী হিসেবে প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন তারা পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান করলে নিকটাত্মীয়দেরও রেহাই না দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে।
এতে বলা হয়, ‘আমাদের কর্মীরা প্রকৃত ইসলামি কায়দায় প্রশিক্ষিত। একদিকে যেমন আমরা আমাদের নিকটতম আত্মীয়কে বাঁচাতে প্রস্তুত নই, যদি তিনি জাতির অখণ্ডতা ও সংহতির সক্রিয় শত্রু হন এবং অন্যদিকে আমরা জনগণের শান্তিপ্রেমী এবং নিরীহ অংশকে বিরক্ত করব না। আমরা বরং তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে চাই এবং তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া সকল প্রকার ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে চাই।’
ডেপুটি সাব মার্শাল ল’ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে সম্বোধন করে মুজাহিদ দুই পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে উল্লেখ ছিল, ‘রাজাকার, আলবদর শাখা’। প্রস্তাবনার শেষে ছিল তার নাম।
চিঠিতে আলবদর গঠনের কারণ ব্যাখ্যা করে মুজাহিদ বলেছেন, ‘আইসিএস কিছু সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। তারা নন-স্টুডেন্ট রাজাকার এবং মুজাহিদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারছে না। তবে আমাদের বাস্তব পর্যবেক্ষণটি হলো যে, অনেক স্থানে কিছু স্বার্থপর এবং সুযোগসন্ধানী সতীর্থরা রাজাকারদের মধ্যে প্রবেশ করেছে, যারা আমাদের সৎ ও সাহসী কর্মকাণ্ডের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও, আমরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে আমরা অসহায় বোধ করি, যখন দেখি কেউ দেশকে সহায়তা করার চেয়ে অন্য উদ্দেশ নিয়ে এমন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, ‘সমস্যাগুলো’ ডেপুটি মার্শাল ল’ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, জোন ‘বি’-কে জানানো হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে সামরিক প্রশাসনের শাসনামলে পাকিস্তানকে দুটি জোনে বিভক্ত করা হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তান ছিল জোন ‘এ’ এবং বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ) ছিল জোন ‘বি’। পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খান জোন ‘বি’র নেতৃত্বে ছিলেন।
মুজাহিদ তার চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছিলেন কেন শুধু আইসিএস কর্মীদের দিয়েই আলবদর গঠনের প্রয়োজন। ‘এটিই একমাত্র ছাত্র সংগঠন যা সমগ্র পাকিস্তানভিত্তিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে তার পৃথক পরিচয় বজায় রেখেছে এবং এদের সদস্য করা হলে প্রস্তাবিত আলবদর বাহিনীতে কোনো আন্তঃদলীয় সংঘর্ষ ঘটবে না। আমরা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা দলীয় স্বার্থের জন্য কাজ করছি না, বরং “জাতীয় সংকট” কাটিয়ে উঠতে আমরা আমাদের যথাসাধ্য সর্বোত্তম পদ্ধতিতে কাজে লাগাতে চাই’- বলা হয় চিঠিতে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জোন ‘বি’র উপসামরিক প্রশাসক ইতোমধ্যেই প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করেছেন এবং সে ইসলামী ছাত্র সংঘকে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশে আলবদর বাহিনী সংগঠিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
আলবদরের নীতিমালা ও কর্মসূচি
মুজাহিদের চিঠিতে আলবদর বাহিনীর যে নীতিগুলো বর্ণনা করা হয়েছে তার প্রথমেই বলা আছে, তারা পাকিস্তানের অখণ্ডতার জন্য কাজ করবে এমন পরীক্ষিত কর্মী বাছাই করবে। আলবদরের তিনটি গ্রুপ থাকবে, একটি জনসাধারণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। দ্বিতীয়টি, গোয়েন্দা শাখা হিসেবে কাজ করবে এবং তৃতীয়টি, সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেবে ও ফাইটিং গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। এই বাহিনী নিজস্ব পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি পরিকল্পনা করবে এবং কর্মসম্পাদনের আগে স্থানীয় সেনা কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমোদন নেবে।
চিঠিতে জনগণের ব্রেইন ওয়াশিং এবং দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের ওপর কড়া নজরদারি ও তাদের বাছাই করে ধরে আনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আলবদর বাহিনীর কর্মসূচিতে জনমত গঠন করা এবং গ্রামে গ্রামে গণসংযোগ, জনসভা ও প্রচারের মাধ্যমে স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
‘শিক্ষার্থীদের মনকে সংহত করার জন্য বিশেষ জোর দেওয়ার’ কথা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। বলা হয়, এটি স্থানীয় এবং অস্থানীয়দের (বাঙালি এবং বিহারি) মধ্যে ব্যবধানকে কমাতে কাজ করবে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে তারা ‘দুর্বৃত্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যারা কাজ করছিল তাদের ওপর নিরবচ্ছিন্ন নজর রাখার জন্য গোয়েন্দাদের একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা ছিল তাদের আরেকটি কর্মসূচি। সেই সঙ্গে ছিল ‘দুর্বৃত্তদের’ ধরে আনা ও জিজ্ঞাসাবাদ এবং জনসভা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করা।
চিঠিতে বর্ণিত শেষ কর্মসূচি ছিল সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে যারা পাকিস্তান রাষ্ট্রবিরোধী কাজে যুক্ত তাদের তথ্য এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের তথ্য সেনাবাহিনীকে দেওয়া। প্রয়োজন হলে বিদ্রোহীদের পাকিস্তানের প্রতি অনুগত করতে সহায়তা করা।
পাকিস্তানি আর্মির চিঠি
‘গোপনীয়’ উল্লেখিত পাকিস্তানি আর্মির চিঠিতে আলবদর স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের ঘোষণা এবং এর কার্যক্রম ব্যাখ্যা করা হলেও কিছু শব্দ সামরিক ভাষায় কোড করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, আলবদরের দুটি মূল লক্ষ্য থাকবে। এগুলো হলো- আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সরকার/সেনাবাহিনীকে সহায়তা করা এবং সীমান্ত এলাকায় নাশকতা কার্যক্রম চালানোর জন্য স্পেক সিডিও (স্পেশাল কমান্ড ডিউটি অফিসার) ধরনের বাহিনী গঠন করা।
চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, জেলা/মহকুমা পর্যায়ে আলবদর সংগঠন গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি উপবিভাগীয় পর্যায়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে ৩১৩ জন ছাত্র স্বেচ্ছাসেবক নেওয়া হবে। এই শিক্ষার্থীরা স্কুল, কলেজগুলোতে তাদের নিয়মিত ক্লাসে অংশ নেবে এবং তাদের কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা নির্ধারিত বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট সম্পাদন করবে।
আলবদর বাহিনীর সুবিধাদি
মুজাহিদ চিঠিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে ফাইটিং গ্রুপের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য স্থান এবং অন্যান্য সব দলের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিসহ অফিসের সুযোগ চেয়েছিলেন। প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য রেশন ও ভাতা, অভিযানের জন্য পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রচার ও তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম বা ‘প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ’ চেয়েছিলেন।
মুজাহিদ উপসংহারে লিখেছিলেন, ‘আমি প্রার্থনা করি এবং আশা করি আপনার কর্তৃপক্ষ অনুগ্রহ করে ইসলামী জমিয়তে-ই-তালাবা সদস্যদেরকে আপনার এলাকাজুড়ে আলবদর বাহিনী সংগঠিত করার অনুমতি দেবে।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সেনাবাহিনীর কমান্ডো টাইপ অপারেশন এবং এসএ (আধা-স্বয়ংক্রিয় বন্দুক) গুলি চালানো/ব্যবহারের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে ১৩ দিনের জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রদান করবে। সেই সঙ্গে উপলব্ধতা এবং প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে বিদ্রোহী ও ভারতীয়দের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র/গুলি আলবদর বাহিনীকে দেওয়া হবে।’