রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নকল ডিবিচক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ -ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,৩০ সেপ্টেম্বর : হাতে ওয়ারলেসসেট, গায়ে ডিবির জ্যাকেট। সাদা পোশাকে আরও কয়েক সদস্যের গাড়ি নিয়ে ব্যাংকের সামনে অবস্থান। এরপর টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে ছো মেরে প্রাইভেটকারে তুলে নেওয়া। প্রথম অবস্থায় যে কেউই দেখলে মনে করবে ওরা ডিবি সদস্য। কিন্তু না, ওরা আসলে ভুয়া ডিবি। এভাবেই তারা রাজধানীতে ডিবি পরিচয়ে চলাফেরা করেন। এরপর টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে টাকা-পয়সা নিয়ে রাস্তায় ফেলে দিতেন। বেশকিছু অভিযোগের পর এই চক্রের সন্ধানে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সবশেষে সোমবার গভীর রাতে যাত্রাবাড়ী থেকে চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে একটি দেশীয় পিস্তল, এক রাউন্ড কার্তুজ, একটি ডিবি লেখা জ্যাকেট এবং একটি ওয়্যারলেস সেট। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- বারেক (৩৭), আবুল কাশেম ওরফে জীবন ব্যাপারী (৫৬) ও স্বপন আকন্দ (৪০)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পরিচয়ে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র ডাকাতি করছে মর্মে তথ্য পায় গোয়েন্দা বিভাগ। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাইভেটকারযোগে ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাংক কিংবা প্রতিষ্ঠানে আগত টাকা বহনকারী কিংবা টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিকে টার্গেট করত বলে জানিয়েছে। এরপর টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কিংবা মাদক দিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যেত। এ ঘটনায় তাদের নামে যাত্রাবাড়ী থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিযানের নেতৃত্ব নেওয়া ডিবির ওয়ারী জোনের ডিসি, আব্দুল আহাদ যায়যায়দিনকে বলেন, এই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই শেষে চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বারেকের নামে বিভিন্ন থানায় আটটি, আবুল কাশেম ওরফে জীবনের বিরুদ্ধে সাতটি এবং স্বপন আকন্দের বিরুদ্ধে নয়টি মামলার তথ্য মিলেছে।