গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ে সরিষার মধ্যে ভুত

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),স্টাফ রিপোর্টার,৩০ সেপ্টেম্বর : স¤্রাট-বাদশাহ ধরা পড়লেও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ে ঠিকাদারী কাজে ভুত এখনও ধরা পড়ে নাই। ই-জিপির মাধ্যমে টেন্ডারিং কাজে স্বচ্ছতা আনবার সকল প্রচেষ্টাই গুড়ে বালি হয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের আরবান ডেভলপমেন্ট ডাইরেক্টরেটের ই-জিপি টেন্ডারে। সরিষার মধ্যে ভুত ধরা পড়েছে এই দপ্তরের ঠিকাদারী কাজে। এই অধিদপ্তরের সিনিয়র প্লান্যার শরিফ মোহাম্মদ তরিকুজ্জামান এর বিরুদ্ধে পিপিআর ২০০৮ এর বিধান লঙ্ঘন করে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেবার অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে। তিনি থানা সেন্টার প্ল্যানিং-১ এর অফিস স্টেশনারী ক্রয়ে অংশগ্রহণকারী সকল ঠিকাদারকে একেক করে ডেকে নিয়ে ঘুষ দাবী করছেন। এই কাজে তাঁর দুষ্কর্মের সহযোগী হয়েছেন অপর একজন সিনিয়র প্ল্যানার তানভির হাসান রেজাউল। অভিযোগে জানা যায়, পায়রা-কুয়াকাটা ইকো ট্যুরিজম প্রকল্পের জন্য ষ্টেশনারী সামগ্রী ক্রয়ের টেন্ডার দেয়া হয় গত ২৯ জুন ২০২০ তারিখে। ই-জিপির মাধ্যমে প্রকাশিত ঐ টেন্ডারে ৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করে। ই-জিপির বিধান অনুযায়ী সর্বনি¤œ দরদাতার সকল যোগ্যতা ও ডকুমেন্ট সঠিক থাকলে তাঁকে কার্যাদেশ দিতে হবে। তা না হলে পরবর্তী প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সিনিয়র প্লান্যার শরিফ মোহাম্মদ তরিকুজ্জামান ও অপর সিনিয়র প্ল্যানার তানভির হাসান রেজাউল পিপিআর এর সকল নিয়ম ই-টেন্ডারিং এর কার্যপদ্ধতিকে থোরাই কেয়ার করে একে এক সকল ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে ডেকে আনছেন। টেকনিক্যাল ভেরিফিকেশনের নামে ৪২টি আইটেমের স্যাম্পল নিয়ে হাজির হতে হচ্ছে সকলকেই। সকলে একেক করে স্যাম্পল নিয়ে আসছেন কাজ পাবার আসায়। কিন্তু দালালের মাধ্যমে বলা হচ্ছে যে ৫০,০০০ টাকা ঘুষ দিতে পারবে তাঁকেই দেয়া হবে কাজ। মাত্র তিন লক্ষ টাকার একটি কাজে ৫০,০০০ টাকা ঘুষ দিতে রাজি হচ্ছেন না কেউ। এ কারণে ৩ মাস অতিবাহিত হলেও কাউকে নোয়া (কাজের নোটিফিকেশন অব এ্যওয়ার্ড) দেয়া হয় নাই। টেন্ডারে অংশগ্রহণ কারী প্রতিষ্টানের কয়েকজন এ বিষয়ে তাঁদের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাঁরা জানান, ৪২টি আইটেমের স্যাম্পল কিনতে তাঁদের দশ হাজারেরও বেশী টাকা লেগেছে। কাজ না পেলে এসব স্যাম্পল কোন কাজে লাগবে না। এতে করে সাতজনের মধ্যে অন্ততঃ ৬ জনই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাঁরা জানান, ঠিকাদারী কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় পয়সা খাওয়ার জন্য এমন অভিনব কৌশল তাঁরা কখনও দেখেন নাই। টেন্ডার ডকুমেন্টের কোথাও এধরনের টেকনিক্যাল মূল্যায়নের কোন কথা নাই। এধরনের স্বেচ্ছাচারিতা পিপিআর ও ই-জিপি কার্যপ্রনালীর সম্পূর্ণ বিরোধী। দরদাতারা জানান,“ আমরা টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী মালামাল দিব, কোন মালামাল নি¤œমানের হলে রিজেক্ট করবে, প্রয়োজনে টেন্ডার সিকিউরিটি ও পারফর্মেন্স সিকিউরিটি বাতিল করবে। এগলো ই-জিপি টেন্ডারিং এর নিয়ম। কিন্তু এখানে ই-জিপির নিয়ম না মেনে মনগড়া নিয়ম চালু করা হয়েছে। সকলের স্যাম্পল দেখার নামে যে প্রতিষ্ঠান তাঁদেরকে টাকা দিতে পারবে তাঁকেই কাজ দিয়ে দিবে। বাকিদেরকে বলবে, তোমাদের স্যাম্পল পছন্দ হয় নাই।” অভিবন এই দুর্নীতির বিষয়টি অধিদপ্তরের পরিচালক (হোপ) জনাব ডঃ খুরশিদ জাবিন হোসেন তৌফিককে ই-জিপি কমপ্লেইন্ট ম্যানেজমেন্ট সিেিস্টমের মাধ্যমে অবহিত করেও ভ‚ক্তভোগীরা কোন প্রতিকার পান নাই। বিষয়টি সিপিটিইউ এর রিভিউ প্যানেলে অভিযোগ আকারে দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের মাধ্যমে জানা যায়। এ বিষয়ে প্রকিউরিং এনটিটি (পিই) সিনিয়র প্লান্যার শরিফ মোহাম্মদ তরিকুজ্জামান (০২-৯৫৫৬২৩৪, ০১৯১২-১৮১৯৫৬) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে ফোন কেটে দেন।