ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ, চট্টগ্রামে ৮ পুলিশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম ব্যুরো,১৯ আগষ্ট : চাহিদামতো টাকা না পেয়ে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বায়েজিদ বোস্তামী থানার ৮ পুলিশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।

আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারকে (উত্তর জোন) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন প্রদানের আদেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হল- বায়েজিদ বোস্তামী থানার এএসআই অমিত ভট্টাচার্য্য, এএসআই মো. শরিফুল ইসলাম, এসআই গোলাম মো. নাছিম হোসেন, এএসআই মো. আশরাফুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. সোলাইমান ও ফৌজুল করিম, পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম ও এসআই মো. নবী। এছাড়া মামলায় ডোনার রুবেল নামে এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। বায়েজিদ বোস্তামী থানা আরেফিননগর বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আব্দুল ওয়াহেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উলে­খ করা হয়, গত ১২ জুলাই রাত ৮টার দিকে বায়েজিদ থানার ৮ পুলিশ সদস্য সিভিল পোশাকে বায়েজিদ মুরাদনগর জামাল কলোনির ১৫ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। পুলিশ সদস্যরা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আসার কথা জানায়। এ সময় মামলার বাদী আব্দুল ওয়াহেদ তার আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে একটি জমি বিক্রির বিষয়ে আলোচনা করেন। পুলিশ সেখান থেকে আবদুল ওয়াহেদসহ চারজনকে মারতে মারতে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানা হাজতে আনার পর আব্দুল ওয়াহেদ ও মো. হোসেনের বিকাশের পিন নম্বর দেয়ার জন্য চাপ দেয় পুলিশ। এতে অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল ওয়াহেদ ও তার সঙ্গীদের মারধরের হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ফোন করে থানায় আসতে বলে। খবর পেয়ে আব্দুল ওয়াহেদের ভাই ছিদ্দিক, বোন মনি আক্তার ও শারমিন আক্তার থানায় আসেন।

তাদের কাছে আটককৃত চারজনকে থানা থেকে ছাড়াতে জনপ্রতি ২ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। এসআই শরীফ বলে- আমরা রিকশাওয়ালাকে ধরে আনলেও ৮০ হাজার টাকা করে নিই। টাকা না দিলে দুই-চারটা মামলা দিয়ে চালান করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তখন এসআই নুরন্নবী মামলা হয়ে গেছে এবং মামলা হালকা করে দেবে মর্মে আবদুল ওয়াহেদের বড় বোনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে চাহিদার টাকা না পেয়ে আবদুল ওয়াহেদকে ২৫ পিস, মো. হোসেনকে ২০ পিস, মো. হানিফকে ১৫ পিস ও আবুল হোসেনকে ২০ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলা দেয়া হয়। বায়েজিদ থানায় যার মামলা নম্বর-১৮(০৭)২০২০।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আলমগীর ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, ‘বাদীসহ চারজনকে বায়েজিদ থানা পুলিশ সাদা পোশাকে গত ১২ জুলাই রাতে আটক করে। এরপর তাদের প্রতিজন থেকে ২ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় ক্রসফায়ার ও মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে তারা পুলিশের চাহিদামতো টাকা দিতে না পারায় প্রতিজনকে ২০ পিস, ১৫ পিস করে ইয়াবা দিয়ে মামলা দেয়া হয়। অথচ অভিযানে তাদের কাছ থেকে কোনো ইয়াবা পাওয়া যায়নি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে বায়েজিদ থানার ৮ পুলিশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারকে (উত্তর জোন) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রিটন সরকার ও পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।