ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,১৬ আগষ্ট : কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তিনি হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। তদন্তের মাধ্যমে আরো নিশ্চিত হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, ‘পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ আছে, যা অনেকাংশে নিশ্চিত হয়েছি। তিনি বিপুল পরিমাণ টাকাও পাচার করেছেন। বেশিরভাগই তিনি হুন্ডির মাধ্যমে পাচর করেছেন বলে আমরা সন্দেহ করছি।’
কোন কোন দেশে তিনি অর্থ পাচার করেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু আমরা নই, আরো অনেকে এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। এ কারণে আপাতত বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না।’
১৭ জুন কুয়েতে পাপুলকে গ্রেপ্তারের পর সে দেশে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৩৮ কোটি টাকার সন্ধান মেলে। বিভিন্ন সময় মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে ১৩২ কোটি টাকা পাচার করেন তিনি। এর মধ্যে ৫০ কোটি টাকা তিনজনের অ্যাকাউন্ট থেকে পাচার করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশে থেকে হুন্ডি ও বিভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ২৮০ কোটি টাকা পাচার করেছেন পাপুল। এসব ব্যক্তির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার সুবাদে ১ হাজার ৪০০ কোটি পাচার করেছেন তিনি। এ বিষয়ে নিবিড় তদন্ত চলছে। আরো কিছু তথ্য-প্রমাণ পেলেই ওই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হবে।
পাচার করা টাকা কুয়েত, দুবাই, আবুধাবিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখেছেন। পাপুল টাকা পাচারে বেশ পটু বলে মনে করেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
২৮ মে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবপাচার প্রতিরোধে নড়েচড়ে বসে। পুলিশ, র্যাব, ডিবি, সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তারই অংশ হিসেবে ৪ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয় আড়াই শতাধিক মানবপাচারকারীকে। পাচারকারীদের অন্যতম হোতা কামালসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরেই মূলত মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানবপাচার সিন্ডিকেটের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও পাপলুর তথ্য বেরিয়ে আসে।
অন্যদিকে, দুদকের কাছে তথ্য আছে, রাজধানীর গুলশানে আছে পাপুলের বিলাসবহুল বাড়ি। যদিও বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে। গুলশান-১ এ ৩ হাজার স্কয়ার ফিটের দুটি ফ্ল্যাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৬ তলা বাড়ি আছে এই সাংসদের নামে।
১৭ জুন মানবপাচারের অভিযোগে পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি এখন সে দেশের কারাগারে আছেন।