আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ভাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে দলের ভাঙ্গা পৌর সহ-সভাপতি এমদাদুল হকের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আকরামুজ্জামান-ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ফরিদপুর প্রতিনিধি,১৩ আগষ্ট : ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমদাদুল হকের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান।
লিখিত বক্তব্যে ভাঙ্গা থানার ওসির অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে নিরীহ জনগণকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বলা হয়, বর্তমান ওসি সফিকুর রহমানের যোগদানের পর ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অজুহাতে থানায় এনে শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে টাকা দাবি করে তা না দিলে করেন মাদক, চাঁদাবাজি অথবা পেইন্ডিং মামলার আসামি হিসেবে চালান দেওয়া হবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। যারা টাকা দিতে পারেন না তাদের এসব মামলার আসামি হিসেবে জেল খাটতে হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত ২৫ জুন ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমদাদুল হক। ওসি বারবার চাপ দেওয়ার পরও এমদাদুল হক ওই অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় ওসির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার ছেলে মো. রীজু মিয়াকে (৩৫) কুপিয়ে জখম করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী মাসুদ, দীপক মজুমদার প্রমুখ। সৈয়দ মাসুদ জানান, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের এ অভিযোগের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ একমত পোষণ করেন বলেই সশরীরে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা থানার ওসি সফিকুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। এ ধরনের অভিযোগ আগেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির কাছেও দেওয়া হয়েছে। সে অভিযোগ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে কোনো সত্যতা পায়নি।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, যারা অভিযোগ করছেন তাদের মধ্যে অনেক নেতা আগে থানার দালালি করতেন। আমি আসার পর তা বন্ধ করে দেওয়ায় তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
ওসি আরও বলেন, স্থানীয় বিরোধকে কেন্দ্র করে মাদকসহ এক ব্যাক্তিকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করায় রীজুর ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ না দেওয়া হলেও পুলিশ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করেছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে তার ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যে সব অভিযোগ আমলযোগ্য তা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে ও পুলিশ হেডকোয়ার্টারের উদ্যোগে তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।