ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,০৩ আগষ্ট : প্রকল্পের কাজ শেষ। তুলে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৮শ কোটি টাকা। অথচ তৈরি হয়নি সরবরাহ লাইন। ঢাকা ওয়াসার পদ্মা-যশোলদিয়া পানি সরবরাহ প্রকল্পের হাল এমনি। বছরে লোকসান দু’শো কোটি টাকারও বেশি। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তৎকালীন প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দিয়ে ঐ পদে পছন্দের এক প্রকৌশলীকে বসিয়েছিলেন ওয়াসার এমডি তাকসিম আলম খান।
পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্প। রাজধানীবাসীর পানির সংকট মেটাতে ৭ বছর আগে হাতে নেয়া এ প্রকল্পের লক্ষ্য প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার সুপেয় পানি সরবরাহ। কিন্তু ৬ বছর পর প্রকল্প শেষ, তুলে নেয়া হয়েছে পুরো টাকাই। কিন্তু যে ঢাকাবাসীর জন্য নেয়া এ প্রকল্প তাদের ঘরে পানি পৌঁছে দিতে এখন পর্যন্ত তৈরিই হয়নি সরবরাহ লাইন। থেকে গেছে পানির সংকট।
পুরনো লাইনেই চলছে পানি সরবরাহ। দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার করে যেখানে মাসে ১ হাজার ৩৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহের কথা সেখানে ঢাকাবাসী পানি পাচ্ছে মাসে ৪৬০ কোটি লিটারের মত। এতে বছরে এ প্রকল্পে ক্ষতি হচ্ছে ২শ কোটি টাকার বেশি।
ঢাকা ওয়াসা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রবিউল কাদের বলেন, ‘এগুলো চরম অন্যায়ভাবে করছে। আর বেসিক্যালি ওয়াসার ইঞ্জিনিয়াররা দুর্নীতিগ্রস্থ না তারা অনেক ভালো। কিন্তু ওয়াসার এমডি এসে এগুলো তছনছ করে দিয়েছে। ওয়াসার ইঞ্জিনিয়াররা সাহস করে কথাও বলতে পারে না, কথা বললেই শাস্তি।’
প্রকল্পে বেশি দামে নিম্নমানের পাইপ কেনার প্রতিবাদ করায় সরিয়ে দেয়া হয় আগের প্রকল্প পরিচালককে। এর পর নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এমডি তার উপদেষ্টা প্রকৌশলী বজলুর রহমানকে প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেন।
পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্প নিয়ে ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে সময় সংবাদ থেকে প্রশ্ন করা হয়, বছর হয়ে গেলেও প্রকল্প থেকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না, এ বিষয়ে কি বলবেন আপনি?
ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান বলেন, ‘আপনি একটা মেইল করে দেন আমার মেইলে আমি একটা মিটিংয়ে আছি।’
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আশ্বাস দিলেন অনিয়ম খতিয়ে দেখার।
সরবরাহ লাইন না করেই শতকোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণের উদাহরণ শুধু পদ্মা-যশোলদিয়াই নয়। সরবরাহ লাইন নিয়ে কোন অগ্রগতি দেখা না গেলেও এগিয়ে চলেছে মেঘনা গর্ন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প ও দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পের কাজ।