ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),স্টাফ রিপোর্টার,১২ জুলাই করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের। পরে জালিয়াতি ধরা পড়ায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল কালাম আজাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
রোববার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে কী বোঝানো হয়েছে এবং রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে কী কী বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল তা জানাতে বলা হয়েছে।
এদিন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের আলোচিত চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ দিয়ে অর্থ আত্মসাতের সঙ্গেও তিনি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী এগুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এদিকে দুপুরে করোনা পরীক্ষা জালিয়াতির মামলায় ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে কোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে না পারায় করোনা পরীক্ষা জালিয়াতির মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশিদ। তিনি জানান, প্রথমে জেকেজির চেয়ারম্যান পদে থাকার কথা অস্বীকার করেন সাবরিনা। পরে আরোও অনেক প্রশ্ন করলে সবগুলোর উত্তর দিতে ব্যর্থ হন তিনি। তাৎক্ষণিক সেখানে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। আরো অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় আর কে কে জড়িত রয়েছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।
হারুন অর রশিদ বলেন, এর আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতির অভিযোগে জেকেজির যেসব সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের সবাই বলেছেন, সাবরিনাই জেকেজির চেয়ারম্যান। তাছাড়া তেজগাঁও কলেজে জেকেজির বুথে হামলার অভিযোগ উঠলে সাবরিনাই প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দেন। অভিযানের একদিন আগে তিনি নিজে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে যান। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কখনই কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করার চুক্তি করেছিল জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (জেকেজি হেলথকেয়ার)। প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার নেপথ্যে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে সব যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবরিনাই।
জানা গেছে, জেকেজির কর্ণধার স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি তারা নিতেন ১০০ ডলার।
গত ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এছাড়া রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও পাওয়া যায়। কলেজের কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের লোকজন।
অভিযোগ পাওয়া যায়, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নজনকে হুমকি দিতেন আরিফ। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালককেও দেখে নেয়ার হুমকি দেন তিনি।