ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ষ্টাফ রিপোর্টার,১১ জুলাই : লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের নির্বাচনি হলফনামা দীর্ঘ ৪ মাসেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-কে দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া, তার স্ত্রী (সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য) সেলিনা ইসলামের হলফনামাও ইসি থেকে দুদক পায়নি। দুদক-সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে, গত ১৬ মার্চ পাপুল ও সেলিনা ইসলামের নির্বাচনে ব্যয় হওয়া অর্থের সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী (ফরম-২০), সম্পদ-দায়, বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের বিবরণী (ফরম-২১), শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ প্রার্থীদের দাখিল করা অন্যান্য নথি চেয়ে ইসিকে চিঠি দেয় দুদক।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ অর্জন করে বিদেশে পাচারসহ শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। অভিযোগটি অনুসন্ধানের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে নথিপত্র চেয়ে দুদক থেকে অনুরোধ করা হয়।
এরপর গত ১৮ জুন আবারও ইসি সচিবের কাছে পাপুল দম্পতির নির্বাচনি হলফনামা চেয়ে তাগিদপত্র দেয় দুদক।
এসব বিষয়ে জানতে ইসি সচিব মো. আলমগীরে সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এদিকে, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসিতে জমা দেওয়া হলফনামায় ঘোষিত সম্পদের হিসাবের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করতে নথি চেয়ে দুদক চিঠি দেয়। কিন্তু ওই নথি এখনো পাওয়া যায়নি। এ কারণে দুদকের অনুসন্ধান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ’
জানতে চাইলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘এমপি পাপুলের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলছে। এই অবস্থায় অনুসন্ধান কর্মকর্তা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেবেন। যা অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ের রুটিন কাজ। তবে, ইসির নথিপত্রের বিষয়ে আমার জানা নেই।’
এদিকে, গত ২৯ জুন পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিনের তথ্য চেয়ে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে চিঠি দেয় দুদক। আয়কর নথিপত্র চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় এনবিআরেও।
এর আগে গত ২১ জুন পাপুল পরিবারের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাব স্থগিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নথি তলব করে চিঠি দেয় দুদক। এরই মধ্যে কিছু নথি দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে পাপুলকে গ্রেপ্তার করে দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় পাপুল ও তার কুয়েতি প্রতিষ্ঠান ‘মারাফি কুয়েতিয়া’র অ্যাকাউন্টে ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা) জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর পাপুলের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।