ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভি,ষ্টাফ রিপোর্টার,০৯ জুলাই : রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ‘হাত’ করতে ব্যবহার করেছিলেন টক শো আর হাসপাতাল ব্যবসা। হাসপাতালে র্যাবের অভিযান শুরুর পর তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রভাবশালীদের কারও কারও কাছে ফোনও করেন। বুধবার পর্যন্ত তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছেন। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আছেন রিজেন্ট গ্রুপ ও হাসপাতালের বেতনভোগী সাত খুদে কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
সাহেদের সঙ্গে ছবি আছে বা যোগাযোগ ছিল এমন চার–পাঁচজনের সঙ্গে কথা হয় ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভির। তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই প্রশ্ন ছিল, মো. সাহেদকে তাঁরা কীভাবে চেনেন। তাঁরা বলেছেন, তিনি টক শোর পরিচিত মুখ। তাঁদের কাছে গিয়ে তিনি নিজেই বলেছেন, কোভিড–১৯–এর চিকিৎসায় দুটি হাসপাতাল ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁরা স্বচ্ছন্দে রোগী পাঠাতে পারেন। গণমাধ্যমে উপস্থিতি ও জোরালো বক্তব্য দেওয়ায় অনেকেই তাঁকে ‘খাঁটি’ লোক ভেবেছিলেন। তাঁরা রোগীও পাঠিয়েছেন। কোনো কোনো সংবাদকর্মী তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। এই পরিচয়ের আড়ালে তিনি তাঁর প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে গেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভিকে বলেন, ‘সাহেদ করিম বেশ কয়েকবার সচিবালয়ে গেছেন। একদিন বললেন, তিনি দুটো হাসপাতাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। রোগী থাকলে যেন পাঠাই। আমি সেখানে রোগী পাঠিয়েছি। একজন ইন্তেকাল করেছেন, বাকিরা সেরে উঠেছেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারির আগে তিনি সাহেদ করিমকে চিনতেন না। র্যাবের অভিযানের পর সাহেদ করিম তাঁকে ফোন করেছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর কিছু করার নেই।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছবি আছে সাহেদের। কত দিন ধরে তিনি সাহেদকে চেনেন, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে খুদে বার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভিকে বলেন, তিনি সাহেদ করিমকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। কেউ কখনো ছবি তুলতে চাইলে তিনি না করেন না। এ ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
তবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভিকে বলেছেন, সাহেদ করিম মাঝে মাঝে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে আসতেন। তিনি সাবেক একটি কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কমিটির বৈঠকে দু–চারবার দেখা হয়েছে। আর দেখা হয়েছে টিভির টক শোতে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক শহীদুল হকের কার্যালয়ে একসময় সাহেদের যাতায়াত ছিল। শহীদুল হক ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম এন্ড টিভিকে বলেন, সাহেদ করিম একবার তাঁর কার্যালয়ে এসেছিলেন। তাঁর হাসপাতালের নামে একটা মামলা হয়েছিল সেটার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার তদবির নিয়ে। ওই সময়ে সাহেদ তাঁকে বলেছিলেন, তিনি ক্যানসারের রোগী। সন্তান ছোট। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি ফোন করেছেন। তবে সাহেদ করিমকে তিনি চিনতেন টক শোর কারণে।