ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি,১০ জুন : সুনামগঞ্জে ছাতকে ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী/কার্য ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ছাতক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ৫ম শ্রেণি পাস আবদুল নূর এখনও বহালতবিয়তে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সীমাহীন অভিযোগ থাকার পরও ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে, বিআর ও সিএসপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন দাপটের সঙ্গে। ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ের ট্রেসেল সুরক্ষা বোল্ডার-পাথর তুলে বিক্রি, বাসাবাড়ি, দোকান, বিভিন্ন স্থাপনা, নদী পাড়ের ডাম্পিং সাইট বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা লুটপাট ও আত্মসাৎ করছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে।
অভিযোগে জানা গেছে, আবদুল নূর ছাতক পৌর শহরের বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করে ১৯৮৬ সালে ইলেকট্রিক খালাসি পদে ছাতক বাজার দফতরে চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৯৩ সালে কার্পেন্টার-হেলপার এবং ২০১১ সালে ওয়ার্ক সুপারভাইজার পদে পদোন্নতির পর প্রায় ৮ বছর আগে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্র্নীতি ও রেলওয়ের স্লিপার, লোহা, পাথর চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগে তাকে ঢাকায় বদলি করা হয়। ২০১৪ সালে আবার ছাতকে বদলি হয়ে আসেন। পরে রোপলাইন (টিএলআর) অস্থায়ী কর্মচারীর বেতন আত্মসাৎ ও ভোলাগঞ্জের পাথর চুরির অভিযোগে ২০১৫ সালে ময়মনসিংহের জামালপুরে আবার তাকে বদলি করা হয়। পরে জামালপুর হতে সিলেট বদলি হন ওয়ার্ক সুপারভাইজার পদে।
স্থানীয় একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আশীর্বাদে এক সময়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী আবদুল নূরকে ২০১৮ সালে (ভারপ্রাপ্ত) এসএই/কার্য/বিআর ভোলাগঞ্জ হিসেবে ছাতকে বদলি করা হয়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ছাতক রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে ও সিএসপির (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবদুল নূর। দায়িত্ব নেয়ার পর বেপরোয়া হয়ে উঠেন আবদুল নূর। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ছেলেমেয়ের নামে মাসের পর মাস বেতন-ভাতা তুলেছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।
সরকারি চাকরির নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত তার ছেলে মাহবুবুর আলম (খালাসি) মেয়ে সুবর্ণা আক্তার (খালাসি) সরকারি ডিউটি ফাঁকি দিয়ে লেখাপড়া করছে সিলেটের একটি বেসরকারি কলেজে। আবদুর নূরের ছেলে মাহবুবুর আলম এক সময় ফেরি করে চা বিক্রি করতেন ছাতকের বিভিন্ন এলাকায়। বেশ কিছুদিন ট্রাকের হেলপার হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তাদের ২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ২টি ট্রাক, ২টি পিকআপভ্যান ও ১টি মোটরসাইকেল। গ্রামের বাড়িতে কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ির নির্মাণ কাজ চলছে। রেলওয়ের সরকারি বাসা বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে তিনি থাকছেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ভাড়া বাসায়।
সূত্র জানায়, আবদুল নূর এর খাস লোক হিসেবে পরিচিত আবু বক্কর সিদ্দিক (চৌকিদার) কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। সিএসপির ২১০টি মোল্ডের সাইড প্লেট কম থাকায় কামাল উদ্দিন ওয়েল্ডারকে অবৈধভাবে কাটিং ওয়েল্ডিং করে তৈরি করে দেয়ার আদেশ করেন আবদুল নূর। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ওয়েল্ডার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন কামাল উদ্দিন।
অভিযুক্ত আবদুল নূর জানান, ১৯৮৬ সালে তার চাকরি হয়। সে সময় রেলের চাকরিতে খালাসি পদে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন ছিল না। এমনিতেই চাকরি হয়ে যেত।
অভিযোগের বিষয়ে ডিএন-২ ঢাকা, অতিরিক্ত দায়িত্ব নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান আলী জানান, আমাদের হেডকোয়ার্টার অফিস ঢাকা। প্রমোশন পেয়েই আবদুল নূর এ পর্যন্ত এসেছেন।
(সূত্র: যুগান্তর)