ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,সিলেট প্রতিনিধি,০২ জুন : সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এসময় এনা পরিবহনের কাউন্টারসহ বেশ কিছু যানবাহনে ভাঙচুর চালায় শ্রমিকরা। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে হওয়া এ সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। একই সাথে র্যাব-৯ এর একটি দল সেখানে পৌঁছায়। তারা কয়েকরাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা গেছে, সিলেট জেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের বিরুদ্ধে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ চলে আসছিল।
এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে সাধারণ শ্রমিকদের একটি পক্ষ টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ শেষে এনা বাস কাউন্টারের দ্বিতীয় তলায় ফলিকের কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এসময় সাধারণ শ্রমিক ও ফলিকের অনুসারি শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁকাগুলি ও লাঠিচার্জ করে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে এলেও টার্মিনাল এলাকায় শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে ফলিক বিরোধী স্লোগান অব্যাহত রেখেছেন। অন্যদিকে অন্যপাশে ফলিকের পক্ষের শ্রমিকরাও অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, ফলিকের অফিস থেকে তার ছেলে শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার কারণে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। তারা অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবেন বলেও দাবি জানান।
এছাড়া কল্যাণ তহবিলের পুরো টাকার হিসাব না দিলে ফলিককে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মিতালী শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মিলাদ আহমদ রিয়াদ জানান, শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ৪১ লাখ টাকার হিসাব দিয়েছেন ফলিক। বাকি দুই কোটি টাকার কোনো হিসাব দেননি। উল্টো তিনি শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া করোনা সংকটে শ্রমিকরা অসহায় জীবন যাপন করলেও শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তাই করা হয়নি। এ কারণে শ্রমিকরা ফলিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেট সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা দুপক্ষকে নিয়ে সমাধানের জন্য এসেছিলাম। সমাধান হয়েও যেত। শেষ মূহূর্তে ছোট বিষয় নিয়ে অতর্কিতে এ ঘটনা ঘটলো। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. জেদান আল মুসা জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও জানান তিনি।