খুনের দোষ স্বীকার করে ২০১৩ সালের ১৯ মে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেন আসলাম ফকির। এরপর ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর এ আবেদন না মঞ্জুর হয়। ফলে ওই বছরের ১৩ নভেম্বর তার ফাঁসি কার্যকরের দিন ধার্য হয়। এজন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি দেয়া হয়।
তবে ফাঁসি কার্যকরের একদিন আগে কারাগারে ‘অস্বাভাবিক’ ও ‘অসুস্থ’ হওয়ার কারণে তার ফাঁসি স্থগিত করা হয়। ওইদিনই দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয়।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নিজ এলাকায় এসে আবার রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হন। ফাঁসির দণ্ড হতে ফিরে আসা এই আসলাম ফকিরের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ কথা বলতে সাহস পায় না। গত ২১ এপ্রিল তার নির্দেশে এলাকায় হত্যা ও লুটপাটের মামলা করেন প্রতিপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে ঘরের টিনের চালের পানি অন্যের বাড়িতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শাজাহান মাতুব্বর ও জাহাঙ্গীর মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জাহাঙ্গীর মাতুব্বরের পক্ষে মদদ দেন আসলাম ফকির। তার মদদে সেদিন শাজাহন মাতুব্বরের সমর্থক শহীদ শেখ নামে একজন কৃষককে পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার পর কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
মামলায় শাজাহান মাতুব্বর বলেন, ওই গ্রামের লতিফ মাতুব্বরের ঘরের টিনের চালের পানি তার (শাজাহানের) ভাতিজা রফিক মাতুব্বরের বাড়ির উঠানে পড়াকে কেন্দ্র করে সামান্য ঝগড়াঝাটি হয়।
এর জের ধরে আসলাম ফকির ও উসমান ফকিরের হুকুমে আসামিরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রথমে রফিক মাতুব্বরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তার বাড়ি ভাঙচুর করে।
এ সময় শহীদ মাতুব্বর তাদের বাধা দিতে এগিয়ে এলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান বলে জানান শাজাহান মাতুব্বর।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে এই মামলায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা সবাই আদালতে ১৫৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে আসলামের নেতৃত্বেই তাকে মারা হয়েছে। বর্তমানে আসলাম পলাতক রয়েছেন। তবে পুলিশ বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে।