এর আগে গত বুধবার দুপুরে উপজেলার মমরুজকান্দি সপ্তগ্রাম অক্সফোর্ড একাডেমী নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ থেকে ঘটনার শিকার নবমশ্রেণির ছাত্রী শারমিন আক্তার কাকলীর মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্ট পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ মার্চ ভোরে মুঠোফোনে শারমিন আক্তার কাকলীকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় তার সাবেক প্রেমিক ও সহপাঠী সাইফ উদ্দিন। অক্সফোর্ড একাডেমীতে আগে থেকেই হাজির ছিল কাকলীর নতুন প্রেমিকও। এসময় সাইফ উদ্দিন প্রতারিত হয়েছে এবং নতুন প্রেমিকও প্রতারিত হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই তারা দুজনে মিলে কাকলীকে গলা কেটে হত্যা করে।
পরে ঘাতকরা কাকলীর বিচ্ছিন্ন মাথা প্রায় একহাজার গজ দুরের একটি ডোবায় ফেলে দেয়। এ ঘটনার পর নতুন প্রেমিক কৌশলে গা ঢাকা দিলেও সাইফ উদ্দিন পাশের সুজাতপুর গ্রামে নিজের বাড়িতেই থেকে যায়। তবে গত বুধবার কাকলীর লাশ উদ্ধারের পর সে বাড়ি থেকে গা ঢাকা দিয়ে আশ্রয় নেয় নানার বাড়িতে।
সূত্রটি আরও জানায়, শারমিন আক্তার কাকলীর ব্যবহৃত মুঠোফোনের আলাপ ধরেই তার সহপাঠী সাইফ উদ্দিনকে কৌশলে গ্রেফতার এবং তার দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে কাকলীর বিচ্ছিন্ন মাথা এবং হত্যায় ব্যবহৃত ধারলো চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় জড়িত পালিয়ে যাওয়া অপর কিশোরকেও খুঁজছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতলব উত্তরের পূর্ব ইসলামাবাদ গ্রামের প্রবাসী বজলু বেপারীর বড় মেয়ে শারমিন আক্তার কাকলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল পাশের সুজাতপুর গ্রামের রাসেল আহমেদের ছেলে সাইফ উদ্দিনের। এরই মাঝে গত কয়েক মাস আগে কাকলী সাইফ উদ্দিনকে বাদ দিয়ে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজে আসা রাজশাহীর আরেক কিশোরের সঙ্গে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সাইফ উদ্দিন খুব ঠাণ্ডা মাথায় ওই কিশোরের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। মূলত ব্যর্থ প্রেমের প্রতিশোধ নিতেই তাদের দুজনের মাঝে এই সখ্যতা তৈরি হয়েছিল।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মতলব উত্তর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে মতলব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিবের দিকনির্দেশনায় পুলিশের তিনটি টিম চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটন এবং দ্রুততার সঙ্গে হত্যার প্রকৃত রহস্য বের করে নিয়ে আসে।
হত্যাকান্ডের শিকার শারমিন আক্তার কাকলী এবং সাইফ উদ্দিন মতলব উত্তরের মমরুজকান্দি সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবমশ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বুধবার ওই স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলতে যায় একদল কিশোর। এসময় খেলার বল কুড়াতে গিয়ে পাশের অক্সফোর্ড একাডেমীর শ্রেণিকক্ষে কাকলীর গলাকাটা লাশের সন্ধান মেলে।