ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,জয়পুরহাট প্রতিনিধি,১৫ এপ্রিল : জয়পুরহাটে গভীর রাতে এক প্রসূতি মায়ের প্রসব ব্যাথা ওঠে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য স্বজনরা এলাকার প্রতিটি পরিবহন চালকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অনুরোধ জানান। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেন না।
কারণ প্রসূতির নারায়ণগঞ্জ ফেরত ছোট ভাই ওই বাড়িতে আছেন। আর পুলিশ হোম কোয়ারেন্টইনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে ওই বাড়িতে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা করোনা ভাইরাস নির্ণয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী পাঠিয়েছেন।
এমতাবস্থায় খুব অনিশ্চিত হয়ে যায় ওই প্রসূতির সন্তান জন্মদানের। স্বজনরা চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েন। উপায়ন্তর না পেয়ে প্রসূতির বাবা আমিনুল ইসলাম পুলিশকে ফোন দেন। একটু পরেই সেই বাড়িতে হাজির হন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান। তিনি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন।
এরপর মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে জয়পুরহাট পদ্মা ক্লিনিকে আমিনুল ইসলামের মেয়ে আরিফা আক্তার শারমিন একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
আমিনুল ইসলাম জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রাধাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। মেয়ে আরিফা আক্তার শারমিনকে দুই বছর আগে মাঝিনা গ্রামের মাসুদ রানার সঙ্গে বিয়ে দেন। সন্তান সম্ভবা মেয়ের প্রসবের জন্য কয়েক দিন আগে তিনি জামাই বাড়ি থেকে মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে প্রসূতির বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে মেয়ের এমন অবস্থায় যখন কেউ এগিয়ে আসলো না তখন খুব ভয় পেয়ে যাই। অবশেষে থানা পুলিশকে ফোনে ঘটনা জানাই। একটু পরেই আমার বাড়িতে থানার ওসি এসে হাজির হন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ফোনে কথা বলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। এরপর জয়পুরহাট পদ্মা ক্লিনিকে মেয়েকে ভর্তি করালে ভোরে মেয়ের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘থানার ওসির এমন মহানুভবতার জন্য আমার মেয়ে এতবড় একটা বিপদ থেকে রক্ষা পেল। এজন্য আল্লাহ নিকট তার জন্য প্রাণ খুলে প্রার্থনা করি।’
ওসি মনসুর রহমান বলেন, ‘সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে একটা ফোন আসে। এবং কিছু বলার আগেই তিনি শুধু কাঁদতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাকে সান্তনা দিয়ে বলি কী সমস্যা বলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠেই আমিনুল ইসলাম তার মেয়ের ঘটনা খুলে বলেন। আমি গাড়ি নিয়ে দ্রুত তার বাড়িতে যাই। এরপর মহিপুর ও জয়পুরহাট হাসপাতালে যোগাযোগ করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে প্রসূতিকে জয়পুরহাট পাঠানোর ব্যবস্থা করি। পরদিন সকালে আমিনুল ফোনে তার মেয়ের একটা ছেলে সন্তান হওয়ার সুখবর দেন। এবং মা-ছেলে ভালো আছে এটাও জানায়।’