ওষুধ কিনতে পুলিশের বাধা, কিডনি রোগী বিপাকে

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,বান্দরবন প্রতিনিধি,০৮ এপ্রিল : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত ১ সপ্তাহ ধরে বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এ কারণে জেলার দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত অনেকের নিত্যদিনের ওষুধ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।

কলেজ পড়ুয়া উসুইচিং মারমা কিডনি রোগে আক্রান্ত। জেলায় ওষুধ না পেয়ে চট্টগ্রামে ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলেন তার বাবা সানুঅং মারমা। তবে সাতকানিয়া পর্যন্ত গেলে তাকে সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়।

সাতকানিয়া থানা পুলিশের বাধার মুখে ওষুধ না নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বান্দরবান ফেরেন সানুঅং মারমা।

করোনাভাইরাসের কারণে চারদিকে লকডাউন চলছে। এর মধ‌্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। কিন্তু ওষুধ সঙ্কটে পড়ে বান্দরবানের কেয়াংয়ের মোড় জাদিপাড়া এলাকায় মৃত‌্যুর মুখে পড়েছেন কিডনি রোগী উসুইচিং মারমা। তিনি বান্দরবান সরকারি কলেজে অনার্স পড়ুয়া ছাত্র।

২০১৫ সালে দুরারোগ্য রোগ কিডনি (End Stage Renal Diseases) রোগে আক্রান্ত হন তিনি। সানুঅং মারমা ছেলের চিকিৎসায় সম্পত্তি যা ছিল সব বিক্রি করে দিয়েছেন। ছেলেকে বাঁচাতে অবশেষে তিনি নিজের একটি কিডনিও দান করেছেন ছেলেকে। ২০১৫ সালের ৭ মার্চ কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়।

এখন সন্তানকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় অষুধ হাতের কাছে নেই। নিরুপায় হয়ে ওষুধ কেনার জন‌্য চট্টগ্রামে রওনা দেন তিনি। মাঝ পথ থেকে ফিরে আসার পর এখন হাহাকার দেখা দিয়েছে পরিবারটিতে।

সানুঅং মারমা বলেন, ‘প্রতিমাসে আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য আমাকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে ছেলেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ওষুধ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধ না পেলে ছেলেকে কী করে বাঁচাব?’

ওষুধ কেনার জন্য চট্টগ্রাম যেতে হবে তাই জেলার সিভিল সার্জন ও সদর থানার ওসির কাছ থেকে প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করেন সানুঅং মারমা। কিন্তু সাতকানিয়া থানা পুলিশ সেসব দেখার পরও তাকে ফিরিয়ে দেয়।

সানুঅং মারমা বলেন, ‘আমি তাদেরকে বলেছিলাম, ওষুধ না পেলে আমার ছেলে বাঁচবে না। তাদেরকে ডাক্তার ও পুলিশের প্রত‌্যয়ন পত্র দেখিয়েছি। তাও তারা যেতে দেননি। আমি ওষুধ নিয়ে আবার বান্দরবান ফিরে আসব বললেও তারা বিশ্বাস করেনি। আমি এখন নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের সাহায‌্য চাই। প্রশাসন যেনো আমার সন্তানের ওষুধ কেনার ব্যবস্থা করে দেয়।’

কিডনি রোগে আক্রান্ত উসুইচিং মারমা বলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই। আমার এই রোগের জন্য আমাকে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। আমি যদি আর দুয়েকদিন ওষুধ না খাই, তবে বড় ধরনের সমস্যা হবে। ওষুধ না পেলে আমি মারা যাব। দয়া করে সাহায‌্য করুন।’

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিউল কবির বলেন, ‘যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে সরাসরি আমাকে ফোন দিতে বলবেন। জরুরি কাজে যেতে কোনো বাধা নেই।’