ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নরসিংদী প্রতিনিধি,২২ মার্চ : এক যুবকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করে কথিত স্ত্রী মন্টি আক্তারের ভাই পাপ্পু তার গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
র্যাব-১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন সমকালকে বলেন, এবিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। ভুক্তভোগী রাসেল হাসান (২৮) ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আব্দুল হকের ছেলে।
রাসেলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পরিবারকে না জানিয়ে নরসিংদীর বানিয়াছলের চোরা বাদলের মেয়ে মন্টি আক্তারকে বিয়ে করেন রাসেল। বিয়ের পর ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি সৌদি আরবে চাকরি নিয়ে চলে যান। বিদেশ যাবার পর রাসেলের বাবা আবদুল হককে বিয়ের কথা জানান রাসেল। অনুরোধে পুত্রবধু মন্টিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান রাসেলের মা-বাবা। পরবর্তীতে বাবার অনুরোধে ২০১৯ সালের এপ্রিলের প্রথম দিকে দেশে ফিরে আসেন রাসেল। দেশে এক মাস থাকার একই বছরের মে মাসের মাঝামাঝি আবারো সৌদি আরব চলে যান রাসেল। সৌদি আরব যাওয়ার পর রাসেলকে তার স্ত্রী মন্টি জানান, তিনি অস্তঃসত্ত্বা। কিন্তু রাসেলের মা-বাবা জানান, মন্টি তাদের না জানিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে নরসিংদীর বানিয়াছলে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এ খবর পেয়ে রাসেল গত ১৩ সেপ্টেম্বর আবারো দেশে ফিরে আসেন। পরে রাসেল স্ত্রী মন্টির বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন, তার গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার পর রাসেল তার বাড়ি চলে যান।
রাসেল আরও জানান, ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাকে নরসিংদী জেলা আদালতের সামনে ডেকে পাঠান মন্টির বড় ভাই পাপ্পু মিয়া। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে গেলে ডিবি পরিচয় দিয়ে কয়েক ব্যক্তি তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেন। রাসেলর ওপর নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে রাসেলকে জীবিত ফিরে পেতে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ঘটনার পরদিন রাতে রাসেলকে মাইক্রোবাসে তুলে পাপ্পু ও তার সহযোগীরা রাত সাড়ে তিনটার দিকে নরসিংদী শহরের শাপলা চত্বরে আসার পর অপহরণকারীরা প্রস্রাব করতে গাড়ি থেকে নামেন। রাসেলও প্রস্রাবের কথা বললে তাকেও সুযোগ দেওয়া হয়। পরে একটি পিকআপ ভ্যান সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় রাসেল চিৎকার করতে থাকেন। এতে অপহরণকারীরা তাকে রেখেই দ্রুত মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালিয়ে যান। পরে রাসেল সারারাত নরসিংদী রেলস্টেশনে কাটান। পরদিন সকালে কুমিল্লায় বড় বোনের কাছে চলে যান। সেখানে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন তিনি।
রাসেল আরো জানান, তাকে অপহরণ করে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখা হয়। সেখানে তাকে দুই হাত কোমরের পেছনে বেঁধে রেখে মেঝেতে ফেলে অমানবিক নির্যাতন এবং গোপনাঙ্গে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অপহরণকারীদের মধ্য থেকে একজন মোবাইল ফোনে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করেন।