ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,সোনারগাঁও প্রতিনিধি,১৬ মার্চ : সোনারগাঁও থানার সাবেক এসআই (সেকেন্ড অফিসার) সাধন বসাক’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (বিভাগীয় মামলা নং-০৪/২০২০) করেছে পুলিশ। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারী পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে এসআই সাধন বসাককে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলাটি করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার। পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্রকে বিভাগীয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করেন। ইতিমধ্যে মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য দিতে সমনও পাঠিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সুপার কার্যালয়ের একটি বিস্বস্ত সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ -৩ (তৎকালীণ সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাতের ব্যক্তিগত সহকারী ও যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপনের ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিতের পর বিভাগীয় মামলাটি রুজু করা হয়। এরআগে, সোনারগাঁও থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন বসাক আল মোস্তফা গ্রুপের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা পেয়ে বিগত ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর গভীর রাতে পদ, পদবী ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সোনারগাঁও পৌরসভার দত্তপাড়ার বাগান বাড়ী থেকে কোন প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা বা কোন রকম অভিযোগ না থাকার পরও যুবলীগ নেতা ও সাবেক এমপির এপিএস জাহিদুল ইসলাম স্বপন, তার ভায়রা আনিছুর রহমান আলমগীর এবং ভাগীনা বাবুলকে আটক করে। পরবর্তীতে রাতেই তাদেরকে থানায় নিয়ে অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালায়। একপর্যায় স্বপন পুলিশি নির্যাতনে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে পুলিশ হেফাজতে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। কিছুটা সুস্থ্য হলে হাসপাতাল থেকে আবারও থানায় নিয়ে শারিরীক নির্যাতন করে পাশাপাশি মুক্তি পেতে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ওসি মোরশেদ ও এসআই সাধন বসাক। এদিকে, গভীর রাতে স্বপনের বাড়িতে পুলিশ হানা দেয়ার পর থেকে পুরো ঘটনাটি সুকৌশলে অডিও রেকর্ড করা হয় যা পরে প্রকাশিত হয়।
এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় জাহিদুল ইসলাম স্বপন ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমকে বলেন, এ বিষয়টির ব্যাপারে আমি বিচার পাব এমন আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। তবে, মহান আল্লাহপাকের ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস ছিল যে, আমি যেহেতু সৎ জীবন-যাপন করি ইনশাল্লাহ বিচার একদিন অবশ্যই পাব। তবে, জেলা পুলিশ সুপারের পেশাগত দায়িত্বের প্রতি সম্মান ও সততার জন্যে তার উছিলায় আল্লাহপাক আমার বিশ্বাসকে আরও মজবুত করলেন। আমি প্রত্যাশা করি একইভাবে ওসি মোরশেদ আলমকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে গভীর রাতে স্বপনসহ তার স্বজনদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম পিপিএম ও সেকেন্ড অফিসার এসআই সাধন বসাকের বিরুদ্ধে পুলিশ হেডকোয়াটার্সে সিকিউরিটি সেলে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ হেডকোয়াটার্স অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ ও পুলিশ হেডকোয়াটার্সের একজন উধ্বর্তন কর্মকর্তার সমন্বয়ে দীর্ঘ সময় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্তকালীন সময়ে অভিযুক্তরা মিথ্যা স্বাক্ষী, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের অসহযোতার মাধ্যমে অভিযোগটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।