হঠাৎ শুনলেন সব ব্যাংক লুটেরা করোনায় আক্রান্ত

SHARE

নঈম নিজাম, সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

না, কোনো খারাপ খবর শুনতে চাই না। বাংলাদেশকে আল্লাহ হেফাজত করুন। তবু ধরুন হঠাৎ খবর ছড়াল বাংলাদেশে করোনা আঘাত হেনেছে। আর আক্রান্ত সবাই একই ঘরানার। কেউ ব্যাংক ডাকাত, ঋণখেলাপির নামে অর্থ পাচারকারী, শেয়ার লুটেরা, আবার আছেন সন্ত্রাসী-জঙ্গিরাও। মাদক ডিলার ও ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও বাদ যাননি। রাজনীতির নামে পতিতা ব্যবসার সর্দারনিদের সঙ্গে চাঁদাবাজ, ক্যাসিনোর হোতারাও আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে তাদের নেওয়া হলো। ডাক্তাররা ঘোষণা দিলেন, চিকিৎসা করবেন না। এ ধরনের মানুষদের চিকিৎসা করা ঠিক নয়। তদন্ত কমিটি হলো, কী করে শুধু নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীই শুধু আক্রান্ত! সাংবাদিকরা খোঁজ নিতে থাকলেন। সবাই জানলেন, ব্যাংক লুটেরারা একসঙ্গে একটা বৈঠকে ছিলেন। জনসমাগম বা একসঙ্গে না হওয়ার নির্দেশ তারা মানেননি। আসলে একটু আনন্দন্ডউৎসব মুডেই ছিলেন সবাই। একজন বিদেশে গিয়েছিলেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে রেখে আসতে। তিনি ভীষণ দাপুটে মানুষ। দেশে ফিরে যোগ দিলেন বৈঠকে। এই লোকটি জানতেন না, তার শরীরে করোনাভাইরাস ছিল। বৈঠকে এসেই সবার সঙ্গে কোলাকুলি করলেন। হাত মেলালেন। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও করলেন। ব্যস, আর যায় কোথায়? বৈঠকে যোগদানকারী সবাই একযোগে, একসঙ্গে আক্রান্ত! শুধু এই গ্রুপ নয়, আরও অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ঠাঁই নিয়েছেন। সে তালিকায় ঘুষ, দুর্নীতিবাজ, টেন্ডার বাণিজ্যর হোতারা রয়েছেন। তাদেরও রেহাই মেলেনি। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই! ওদের সঙ্গে এদের দেখা না হলেও কী করে যেন ভাইরাসটা ছড়িয়ে গেল। সবাই যার যার মতো হাসপাতালে গেছেন। কিন্তু সমস্যা তৈরি করলেন ডাক্তার, নার্সেরা। তারা এই রোগীদের ধারেকাছে ঘেঁষছেন না। সিন্দুক থেকে বস্তা বস্তা টাকাও আসছে হাসপাতালে। এ টাকা অনেক দিন সিন্দুকে থাকার কারণে করোনাভাইরাসের জীবাণু আছে- এ প্রচার আগেই হয়ে গেছে। তাই কেউই টাকার ধারেকাছে ঘেঁষছেন না। এমনকি হাসপাতালের আয়া-বুয়ারাও না। ডাক্তারদের মাঝে বিশেষজ্ঞরাও আছেন। তাদের একজন বললেন, ‘আমরা চিকিৎসা বুঝি, কিন্তু হাসপাতালে পর্যাপ্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই।’ আয়া-বুয়া, নার্স-ব্রাদার সবাই এর সঙ্গে একমত হলেন। রোগীদের একজন বললেন, ‘আমরা সবাই এখন এখানে রোগী। আমাদের অন্য কোনো পরিচয় নেই। চিকিৎসা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব।’ একজন নার্স জানালেন, ‘আমাদের দায়িত্ব, এটা সত্য। কিন্তু এ হাসপাতালে যেসব ইকুইপমেন্ট সাপ্লাই দেওয়া হয়েছিল সব চাইনিজ মাল। চীন থেকে নেওয়া হয়েছে জার্মানি। সেখানে জার্মানির স্টিকার বসিয়ে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। দেশের সব হাসপাতালের একই চিত্র। ইকুইপমেন্টের একটাও কাজ করছে না। তা ছাড়া হাসপাতালগুলোয় মেডিসিন নেই। সব মেয়াদোত্তীর্ণ। এমনকি করোনা পরীক্ষার যন্ত্রপাতিও নেই।’ এবার সবাই চিৎকার করে বলছেন, ‘যত টাকা লাগে দেব। চিন্তা নেই। দরকার হয় নতুন যন্ত্রপাতি আনুন। বিশেষ বিমান পাঠান। তার পরও আমাদের চিকিৎসা করুন।’ জবাব এলো- ‘প্লেন চলছে না। সব দেশের ফ্লাইট বন্ধ। এমনকি ভারত যাওয়ারও সুযোগ নেই।’ দূর থেকে একজন নার্স বললেন, ‘টাকা দিয়ে এখন কী করবেন? এখানে কেউ টাকা নেবে না। আপনাদের টাকায় করোনাভাইরাস! এগুলো ব্যাংক লুট, ঘুষ বা ক্যাসিনোর টাকা। অবৈধ টাকা সিন্দুকে রেখে দিয়েছিলেন বস্তায় ভরে। সেসব বস্তার এখন দুই পয়সা দাম নেই। বিদেশে বড় বড় বাড়ি কিনেছেন, মার্কেট কিনেছেন, পাঁচ তারা হোটেল কিনেছেন কোনো কাজে আসছে না। ফ্লাইট বন্ধ। কেউ যেতে পারবেন না। আসতে পারবেন না। এখানেই সবাইকে মরতে হবে। মরার পর লাশ নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি। কারণ, করোনার ভয়ে কেউ লাশ নিতে আসবে না। আত্মীয়-পরিজনও না।’

পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে হাসপাতালে অসহায়ের মতো বসে আছেন ব্যাংক লুটেরা, শেয়ার কেলেঙ্কারির নায়ক, রাজনীতির গডফাদার, ইয়াবা-মাদকের ডিলার, সন্ত্রাসী, ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি করা জঙ্গিরা। একজন বিদেশে ফোন করলেন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য। জবাব এলো, ‘সব ভিসা জব্দ। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসবে না। পাইলটও কোনো করোনাযাত্রী তুলবে না।’ এতক্ষণ যা বললাম, লিখলাম পুরোটাই কাল্পনিক। বাস্তবে এমন কোনো ঘটনা বাংলাদেশে নেই। হবেও না। সবাই ভালো আছেন। ভালো থাকবেন সে কামনাই করি। চিরশত্রুরও এমন রোগ হোক, চাই না। আল্লাহ বাংলাদেশের সব মানুষকে রক্ষা করুন। আর এই খারাপ মানুষগুলোর করোনা হলে তা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়বে। তাই আরও বেশি করে প্রার্থনা করছি, বাংলাদেশ যেন রক্ষা পায়। পাশাপাশি দেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- সবাই যেন এই মহামারী নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকেন। ৩৬০ আউলিয়ার এই দেশ বিভিন্ন সময় অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে। এবারও পাবে। দেশের মানুষকেও থাকতে হবে ধৈর্য নিয়ে। মৃত্যু অবধারিত। তবে সবাই একসঙ্গে মোকাবিলা করলে রক্ষা পাব এই মহামারী থেকে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির খলনায়করা একবারও কি ভেবেছেন, এমন রোগ হলে পরিণতি কী হবে? কেউই পাশে আসবে না। দাফনেও থাকবে না। তাহলে কী কারণে এত লোভ-লালসা? এত লুটপাট? এ সমাজের মানুষ এখন লুটেরাদের নাম নেয় ঘৃণায়। বিদেশ গিয়েও নিস্তার নেই। কানাডায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন মিছিল হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাইতে সাধারণ বাংলাদেশি শ্রমিকরা আঙ্গুল দিয়ে দেখায়- এই ভবনটি অমুক লুটেরার! মানুষ এই লোকগুলোকে দুই চোখে দেখতে পারে না। তার পরও কীসের নেশায় সবকিছু শেষ করছেন আপনারা? ভীষণ কষ্ট লাগে। দুঃখ হয়। হতাশায়ও মন ভরে যায়। সৎপথে আয়ের একটা গৌরব থাকে। সৎ ব্যবসায়ীরা বুক উঁচু করে এই সমাজে চলছেন। মানুষ তাদের সম্মান দিচ্ছে। শ্রদ্ধা করছে। আর লুটেরাদের কোনো জগৎ নেই। তারা দেশে চলেন লুকিয়ে, আর বিদেশে থাকেন পালিয়ে। স্বাভাবিক জীবন কোথাও নেই।

আসলে বুঝতে হবে প্রকৃতির সহ্যের একটা সীমা থাকে। সেই সীমা অতিক্রম করলেই দুনিয়ায় মহামারী নেমে আসে। আঘাত হেনে কিয়ামতের নমুনা দেখিয়ে দিয়ে যায়। নিজেকে নিয়ে বড়াই করার কিছু নেই। ক্ষমতা দুই দিনের। অবৈধ আয়ের অর্থ থাকে না। যাওয়ার সময় কেউই কিছু নিয়ে যেতে পারে না। মানুষ একা আসে। একা যায়। সঙ্গে কিছুই যায় না। কোনো কিছুই থাকে না। এক নিষ্ঠুর করোনাভাইরাস তছনছ করে দিচ্ছে সারা দুনিয়া। মৃত্যুভয়ে পুরো বিশ্ব আজ অচল! মেডিক্যাল সায়েন্স বুঝতেই পারছে না কী করবে। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনেক কিছুর উন্নতি করেছে। আবিষ্কার করেছে। চীন তিন দিনে বিশাল বিশাল হাসপাতাল করেছে। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রমাণ করে দিয়েছে, মানুষ এখনো সবকিছু জয় করতে পারেনি। সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। শেক্সপিয়র হ্যামলেটে মানুষের সীমিত জ্ঞান নিয়ে বলেছিলেন, ‘স্বর্গ ও পৃথিবীতে আরও কিছু রয়েছে’। আরও অনেক কিছু রয়েছে, যা আমরা জানি না। বুঝি না। নিজেদের মতো করে একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করাই। কিন্তু এ ব্যাখ্যা শেষ পর্যন্ত টেকে না। সুপার পাওয়ার হয়ে যায় অসহায়। চিন্তায় পড়ে যায় নিজের শরীরের নিরাপত্তা নিয়ে। এত ভাব দেখানোর কিছু নেই। দুনিয়ার সম্পদ, ক্ষমতা নিয়ে গর্ব করার কিছু নেই। জীবন খুবই ছোট। হিটলার, মুসোলিনির মতো অতি দুঃসাহসীদেরও চলে যেতে হয়েছে নিষ্ঠুর পরাজয়ে। অন্যায় চিরস্থায়ী হয় না। অসত্য দীর্ঘদিন টেকে না। সততা নিয়ে চলার অহংকার থাকে। ভালোমন্দ জয় করে চলারও একটা ভাব থাকে; যা সম্পূর্ণ আলাদা। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘যাত্রী আমি ওরে/চলতে পথে গান গাহি প্রাণ ভরে/দেহ-দুর্গে খুলবে সকল দ্বার/ছিন্ন হবে শিকল বাসনার/ভালোমন্দ কাটিয়ে হব পার/চলতে রব লোকে লোকান্তরে।’

ইসলামের ইতিহাসের ব্যতিক্রম শাসক হজরত ওমর (রা.) শাসক হিসেবে বারবার প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা মোকাবিলা করেছেন। তাঁর সময়ে আরবে একবার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় ৬৩৮ সালে। ক্ষুধা, মহামারীতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। দুঃখ-দুর্দশার শেষ ছিল না সাধারণ মানুষের। কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন এ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ওমর (রা.)। ভীষণ উৎকণ্ঠা নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি শাসনকার্যে অনেক পরিবর্তন আনেন। মদিনার খাদ্য সংকট মোকাবিলায় চিঠি লেখেন সিরিয়া, ইরাক ও ফিলিস্তিনের গভর্নরদের। সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন। সবার আগে সাড়া দেন সিরিয়ার গভর্নর আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ। তিনি নিজে মদিনায় ছুটে আসেন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে। রক্ষা করেন মদিনাবাসীকে। এই সময়ে মদিনার ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা সিরিয়া, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এর কিছুদিন পরই মহামারী প্লেগ হানা দেয় ওমর (রা.)-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন প্রদেশে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় সিরিয়া ও ফিলিস্তিন। মানুষ আল্লাহর কাছে রাতদিন এ সময় প্রার্থনা করত এ রোগ থেকে রক্ষা পেতে। সেবার প্লেগে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। সবাই ছিলেন মুসলমান। প্লেগ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে একসঙ্গে কাজ করেন ওমর ও আবু উবাইদা (রা.)। এ সময় হজরত ওমর উৎকণ্ঠায় পড়েন উবাইদার শরীর নিয়ে। সিরিয়ায় থাকলে প্লেগে উবাইদা আক্রান্ত হতে পারেন। ওমর প্লেগ নিয়ে সতর্ক করেন উবাইদাকে। এক পর্যায়ে অনুরোধও করেন মদিনায় চলে আসতে। আবু উবাইদা নিজের সৈন্য ও সাধারণ মানুষকে রেখে মদিনায় যেতে অপারগতা ব্যক্ত করেন। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমার যোদ্ধা ও নাগরিকদের বিপদে রেখে আমি যেতে পারি না। এটা হয় না।’ প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়তিতে ৬৩৯ সালে প্লেগে আক্রান্ত হয়েই উবাইদা (রা.) মৃত্যুবরণ করেন। হজরত ওমর এ মৃত্যুতে দুঃখ পেয়েছিলেন। পরের বছর প্লেগে শেষ হয়ে যাওয়া সিরিয়ার রাজনীতি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ওমর (রা.) আবারও সিরিয়া সফর করেন। সবকিছু ঠিক করে ফিরে যান।

মানুষের জীবনে রোগব্যাধি সব সময় ছিল এবং আছে। কিন্তু ভয়াবহ কিছু হলে বোঝা যায় মানুষ কত অসহায়! সব সময় আমরা নানামুখী সংকটে থাকি। সমস্যার শেষ থাকে না। তা ছাড়া এমনিতেই মানুষের জীবন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ‘হয়তো কিছু নাহি পাব’ গানের শেষ লাইনটির মতো। শেষ লাইনটি হচ্ছে, ‘ধূপ চিরদিন নীরবে জ্বলে যায়/প্রতিদান সে কি পায়?’ ধূপ আসলে নীরবে জ্বলে শেষ হয়। প্রতিদান পায় না। সাধারণ মানুষ সব সময় একটা কষ্টের মাঝে থাকে। ধূপের মতো মানুষ নীরবে সবকিছু হজম করে। লুটেরাদের কান্ডকীর্তিতে মানুষের মাঝে চরম হতাশা তৈরি হয়ে আছে। কিন্তু কেউ কিছু বলে না। সয়ে যায়। মনের ভিতরে বয়ে বেড়ায় ক্ষোভ আর দুঃখ। জালালুদ্দিন রুমি বলেছেন, ‘ধৈর্যের মর্ম কেবল নিবিষ্ট হওয়া বা অপেক্ষমাণ রওয়া নয়, বরং তা হলো দূরদর্শন করতে পারা। যার অর্থ কণ্টকপানে চেয়েও গোলাপ দর্শন করা। প্রেমীরাই ধৈর্যশীল আর অবগত যে, চন্দ্রেরও কিছু সময় প্রয়োজন হয় পূর্ণরূপে মোহিত হতে।’ এই প্রেম শুধু প্রেমিকার জন্য নয়। এ দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম আছে। তারা সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে দিন কাটায়। রাজনীতির নামে নোংরামি, লুটপাট দেখে হতাশ হয়। ব্যথিত হয়। কেউ হয়তো বলেই ফেলে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন পরিস্থিতির জন্য এ দেশ স্বাধীন করেননি। দেশটা স্বাধীন করেছেন সবার জন্য সহনশীল, বৈষম্যহীন পরিবেশ তৈরির জন্য। কিন্তু কিছু মানুষ সব নষ্ট করে দিচ্ছে। শেষ করে দিচ্ছে। এভাবে চলে না। হয় না। তার পরও দুর্যোগ দেখলে সবাই আবার এক হয়ে যায়। এখনো করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশের সব মানুষ এক। শুক্রবার মসজিদে প্রার্থনা করেছে সবাই। বিশ্বাস করি, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই সচেতন হলে এই কঠিন ভাইরাস মোকাবিলা অবশ্যই করতে পারবে। খারাপ সময়কে জয় করতে পারবে। করোনার চেয়েও ভয়াবহ অনেক রোগ এ দুনিয়ায় অতীতে হানা দিয়েছিল। কিন্তু এখনকার মতো এত ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়নি। তবে মানুষ ইবোলা, সারস, সোয়াইনফ্লু মোকাবিলা করেছে। কঠিন ভাইরাস সারসে ১০ শতাংশ, ইবোলায় ২৫ শতাংশ, সোয়াইনফ্লুতে ৪.৫ শতাংশ আক্রান্ত মানুষ মারা গেছে। সে হিসাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অনেক কম। ৩০ বছরের নিচে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর পরিমাণ ৫ হাজার। আক্রান্ত অনেক বেশি। সঠিক নিয়ম মেনে চললে এ রোগ আমাদের দেশে আঘাত হানতে পারবে না। আতঙ্ক কাটিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক করতে হবে। করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের উহান প্রদেশে আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তারা পারছে। সময় লাগছে। লাগুক। আমাদেরও পারতে হবে। সাহস ও সচেতনতা দিয়ে ভয়ঙ্কর এ রোগকে হারাতে হবে। পরাস্ত করতে হবে। মানুষ পরাস্ত হবে না।

লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।