ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,১০ মার্চ : জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান করা হবে বলে জানিয়েছেন মুজিব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।এর আগে, জন্মশতবার্ষিকী উদ্বোধন অনুষ্ঠানের কর্মসূচি নতুনভাবে সাজানোর লক্ষ্যে আজ বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ষষ্ঠ সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট বিশ্ব পরিস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য এবং জনগণের কল্যাণের বিষয় বিবেচনা করে ব্যাপক জনসমাগম পরিহার করে জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান পালন করা হবে। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে উদ্বোধন অনুষ্ঠান হচ্ছে না।সভায় প্রধান সমন্বয়ক গতকাল রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তাৎক্ষণিকভাবে অনুষ্ঠিত জাতীয় কমিটি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির যৌথসভায় তার প্রদত্ত নির্দেশনা সম্বন্ধে সবাইকে অবহিত করেন। তিনি জানান, ১৭ মার্চ ব্যাপক জনসমাগম পরিহার করে উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দোয়া মাহফিল আয়োজন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সীমিত আকারে অনুষ্ঠান, স্মারক ডাক টিকেট ও স্মারক মুদ্রা উন্মোচন এবং স্মরণিকা ও স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে।প্রধান সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উল্লেখ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন বাংলাদেশের মানুষ যেন অন্ন পায়, বাসস্থান পায়, বস্ত্র পায়। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মুজিববর্ষে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের গৃহ দেয়া হবে। প্রতিটি মানুষের ঠিকানায় ঘর দেয়া হবে। এরকম জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মুজিববর্ষ উদযাপিত হবে।’আজকের সভায় পুনর্বিন্যাসকৃত উদ্বোধন অনুষ্ঠান ভিন্নমাত্রায় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যাতে জনসমাগম এড়িয়ে সবাই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন। এ লক্ষ্যে আসাদুজ্জামান নূর এমপিকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।উদ্বোধন অনুষ্ঠান সূচির একটি খসড়া সভায় প্রকাশ করা হয় এবং জানানো হয়, এই সম্বন্ধে প্রস্তাবনা জাতীয় কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের পর সবাইকে জানানো হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, অসীম কুমার উকিল, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।এর আগে, গতকাল রাতে করোনাভাইরাসে বিশ্ব পরিস্থিতি ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় ১৭ই মার্চে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানানো হয়। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিরা এ মুহূর্তে বাংলাদেশে আসছে না বলেও জানানো হয়।গতকাল রবিবার রাতে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার উপস্থিতিতে মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন।