ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,০১ মার্চ : গ্রেফতারের পর নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার নানা অপকর্মের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বের হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে পাপিয়ার অনুপ্রবেশ ও পদ পাওয়ার বিষয়ে।
পাপিয়া ছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ২০১৪ সালে কমিটি গঠন করে পাপিয়া এই পদ দেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।
তিন কোটি টাকা খরচ করে পাপিয়া ওই পদ বাগিয়ে নেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
এবার জানা গেল, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পাপিয়া। এ জন্য ১০ কোটি টাকা খরচও করেছিলেন তিনি।
শুক্রবার রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী এ তথ্য প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাপিয়ার স্বপ্ন ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া। সেজন্য কোনো চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তিনি। যুবলীগের পদের মতো এ মনোনয়নের বেলায়ও বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করেন পাপিয়া। ঢাকা মহানগর যুব মহিলা লীগ, আওয়ামী লীগ, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও এমপির ধর্ণা ধরেছিলেন তিনি। এসব নেতাকে পাপিয়া অন্তত ১০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা নিয়েও মনোনয়ন বাণিজ্যে হেরে যায় দায়িত্ব নেয়া নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাপিয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করার সাহসই পাননি তারা।’
মনোনয়ন না পেয়ে এবং ১০ কোটি টাকা হারিয়ে ক্ষুব্দ হন পাপিয়া। হতাশা আর ক্রোধে আগের চেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শুরু করেন মন্ত্রী, এমপিদের ব্ল্যাকমেইল।
একের পর অপরাধ জগতে জড়িত হয়ে অন্ধকার জগতের সম্রাজ্ঞী হয়ে ওঠেন। রুশ তরুণী এনে তাদের দিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রলোভন দেখাতেন। এক পর্যায়ে তাদের ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করতেন।
তার এসব কাজে পূর্ণ সহায়তা করে স্বামী সুমন ও তার গং।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘পাপিয়া ও তার স্বামীসহ আরো দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অর্থপাচারের বেশকিছু তথ্য মিলেছে। অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের তথ্যও মিলেছে।’