ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,২৭ ফেব্রুয়ারি : খালেদা জিয়ার জামিন উচ্চ আদালতের খারিজের আদেশকে ‘সরকারের হিংস্রাশ্রয়ী নীতির বর্হিপ্রকাশ’ অভিহিত করে আগামী শনিবার ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশের জেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
হাইকোর্টের আদেশের পর বিকাল ৪টায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের এই খারিজ আদেশের মধ্য দিয়ে সরকারের হিংস্রাশ্রয়ী নীতিরই বর্হিপ্রকাশ ঘটলো। সরকার মুক্তিপণ আদায়ের মতোই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়, অন্যায্য ও সকল আইনি অধিকার লঙ্ঘন করে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। যারা অপহরণ করে, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে, দেশনেত্রীকেও কারারুদ্ধ করে মুক্তিপণ আদায়ের মতোই সরকার কাজ করছে।আর এই কারারুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার মুক্তিপণ আদায় করছে।”
‘‘সরকারের নির্দেশে দেশনেত্রীর জামিনের আবেদন খারিজের আদেশের আমি বিএনপির পক্ষ থেকে আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। এই মুহুর্তে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”
রিজভী কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘‘ এই যে দেশনেত্রীর জামিনের আবেদনের খারিজের যে আদেশ দেয়া হলো এর প্রতিবাদে আগামী শনিবার ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢা্কা মহানগরসহ দেশব্যাপী জেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।”
শনিবার ঢাকায় নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ২টায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সকালে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শেষে বিকালে তার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, খালেদা জিয়া ‘অ্যাডভানসড টিট্রমেন্ট’ নিতে সম্মতি দেননি।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নাকচ করে গত ১২ ডিসেম্বর এক আদেশে আপিল বিভাগ বলেছিল, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ দেয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা জনগন বিশ্বাস করে না, জনগন বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিশ্চিহ্ন করতে দেশনেত্রীকে কারাগারে অন্তরীন করেছে। তাই দেশনেত্রীর অসুস্থতার সরকার প্রধান হিংসা চরিতার্থ করতে টার্গেট হিসেবে বেঁছে নিয়েছে। অর্থাৎ বিনা চিকিৎসায় দেশনেত্রীকে শোচনীয় দুদর্শায় উপনীত করার কৌশলী চক্রান্ত চালাচ্ছে এই সরকার।”
‘সেজন্য আদালতে কাঁদে বন্দুক রেখে তাদের টার্গেট বাস্তবায় করছে। আদালতকে ব্যবহার করে গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীর জামিন ও চিকিৎসা নিয়ে অপরিনামদর্শীতার মাশুল একদিন দিতে হবে। সরকারের ইচ্ছায় দেশনেত্রীর জামিন আবেদন খারিজের আদেশের সিদ্ধান্ত জাতিকে এক বিপদজনক জায়গায় ঠেলে দেয়ারই নামান্তর।’
রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দিয়ে সরকার মনের সাধ মেটালেও জনগণ এর উপযুক্ত জবাব শিগগিরই দিতে প্রস্তুত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, হারুনুর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।