ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,২৭ ফেব্রুয়ারি : নরসিংদী যুব মহিলা লীগের ব’হিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের ঘনিষ্ঠদের তালিকা করছে র্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পাপিয়ার সঙ্গে কার কার যোগাযোগ ছিল, কারা তার ‘রংমহলে’ আসা-যাওয়া করতেন তারও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এতে পাপিয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ও ঘনিষ্ঠদের মধ্যে আ’তঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জি’জ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে অনেক পিলে চমকানো তথ্য। বেরিয়ে আসছে অনেকের নাম। ত’দন্তে উঠে আসছে, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে পিউর বিশেষ সম্পর্ক এবং ব্যবসার বিষয়টিও।
তবে ত’দন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি ত’দন্তসংশ্লিষ্টরা।
পাপিয়ার অ’পকী’র্তি নিয়ে তোলপাড় চলছে সারাদেশে। মুখরোচক গল্প এখন শুধু এক পাপিয়াতে সীমাব’দ্ধ নেই, আলোচনায় এসেছে অনেক রথী-মহারথীর নাম। ভাইরাল হয়েছে তার সঙ্গে ফ্রেমব’ন্দি অনেক ছবি।
পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনের একাধিক মোবাইল ফোনের কললিস্ট, কলরেকর্ড, ভিডিও ক্লিপস ও ছবির সূত্রে শত শত নারী-পুরুষের সম্পৃক্ততার ক্লু মিলেছে।
আ’টকের পর র্যাব ও পু’লিশ হে’ফাজতে প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওয়েস্টিনের রেজিস্ট্রার ও সিসিটিভির ফুটেজে রয়েছে ওই স্যুটে কারা যাতায়াত করত, তার রেকর্ড।
সবমিলিয়ে আ’ইনশৃ’ঙ্খলা বা’হিনী ও গোয়েন্দাদের হাতে এখন হাইপ্রোফাইল কয়েক ডজন নারী-পুরুষের নাম। ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানতে চাইলে র্যাব-১ অধিনায়ক শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, ‘পাপিয়াসহ অন্যদের গ্রে’প্তারের পর ব্যাপক জি’জ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাদের কাছে যা যা তথ্য ছিল সবই প্রকাশ করেছি।
তাদের রি’মান্ডে এনেছে পু’লিশ। তবে আমরা চাচ্ছি মা’মলাগুলো ত’দন্ত করতে। কারণ তাদেরকে আরও ব্যাপক জি’জ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। পাপিয়া ও তার স্বামীর সঙ্গে আরও কে কে আছে এসব বিষয় খুঁজে বের করবো।’
জাল মুদ্রা সংক্রান্ত মা’মলার ত’দন্ত কর্মক’র্তা বিমানবন্দর থা’নার পু’লিশ পরিদর্শক (ত’দন্ত) কায়কোবাদ কাজী বলেছেন, প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে শামীমা নূর পাপিয়া দাবি করেছেন তিনি রাজনৈতিক প্র’তিহিংসার শিকার।
র্যাব ও পু’লিশের একাধিক সূত্র বলেছে, তারকা হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুকিং করে যে রংমহল গড়ে উঠেছিল তাতে কাদের যাতায়াত ছিল সেই তালিকা দীর্ঘ।
ও তার স্বামীর দৈনন্দিন অর্থ ব্যয়ের অঙ্ক দেখলে ধারণা করা যায় সেখানে যারা যেতেন তাদের কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো। তাদের নেটওয়ার্কে বড় মাপের অনেক ব্যবসায়ী, ধনীর দুলালের নাম যেমন রয়েছে তেমনিভাবে রয়েছে অনেক সেলিব্রেটি তরুণীর নাম।
মডেল, নায়িকা ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকের সঙ্গে সখ্য ছিল পাপিয়ার। ওইসব মডেল, নায়িকাও চুক্তিতে যেতেন ওয়েস্টিনের স্যুটে। সেখানে অনেক ব্যবসার দেনদরবার, তদবির ও লেনদেন হতো।
পাপিয়া চক্রের অনেকে দাঁবড়ে বেড়ায় সচিবালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। তারা নিয়োগ, বদলিসহ নানাবিধ তদবির বাণিজ্যে ব্যস্ত সময় পার করে। সন্ধ্যার পরও এদের অনেকে ‘ঢু’ মারে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মক’র্তার খাস কামরায়। তাদের নামে ইস্যু হয় বিশেষ পাস।
বিডি স্কট সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি নেটওয়ার্ক আছে পাপিয়ার। তাতে বিদেশি সুন্দরী তরুণীরাও আছে বলে ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদের দিয়ে মনোরঞ্জন করে মন যুগিয়েছেন ওপরওয়ালাদের। সরকারের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ ছিল তার।
উত্তরা জোনের পু’লিশ কর্মক’র্তাদের মতে, শুধু তারকা হোটেল নয়, বাগানবাড়ি, বাংলো বাড়ি, ডুপ্লেক্স ও রিসোর্টে রয়েছে রংমহল। ঢাকার আশপাশে সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জে এমন অনেক রংমহলে রয়েছে জলসা ঘর।
আলো আধারির খেলায় সেখানে জমে উঠে ম’দের আসর। সাভারের মধুমতি মডেল টাউনের ভেতরে তিনটি রিসোর্টে রংমহল গড়ে উঠার কাহিনী ওপেন সি’ক্রেট।
বাইপাইলে এক অভিনেতার বাগান বাড়িতে রয়েছে জলসা ঘর। মধ্য গাজীরচটেও রয়েছে জলসা ঘর। উত্তরার পাশে তুরাগে রিসোর্টের আড়ালে চলছে উন্মদনা। বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক ও আলাদীন পার্কে রাত্রী যাপনের নামে অ’সামাজিক কর্মকাণ্ড ও নাচগানের আসরের খবর পাওয়া যায় প্রায়ই।
পু’লিশ ওইসব স্থানে একাধিকবার অ’ভিযান চালালেও ব’ন্ধ হয়নি অপক’র্ম। গাজীপুরের বিভিন্ন রিসোর্টের রাতের চিত্র ভিন্ন। পূর্বাচল ও ৩শ ফিটের আশপাশে গড়ে উঠা অনেক রিসোর্টের আড়ালে চলছে মনোরঞ্জনের আয়োজন। মানিকগঞ্জের কয়েকটি রিসোর্টের রাতের আড্ডায় থাকে ম’দ-নারী ও নাচ-গানের আসর।