দনিয়া কলেজে ৬ বছরে ৪৪ কোটি টাকা লোপাট

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,১৫ জানুয়ারি : সৌজনৌ : নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ ২২ জন শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ দিয়ে বেতন নিয়েছেন প্রায় ২ কোটি টাকা। গত তিন অর্থবছরে কলেজ ফান্ড থেকে লুটপাট হয়েছে ১৬ কোটি টাকার বেশি। শিক্ষকরা অবৈধভাবে বিভিন্ন সুযোগসুবিধা নিয়েছেন ৩ কোটি টাকার। চুক্তির বাইরে ঠিকাদারকে দেয়া হয়েছে সাড়ে ৬ কোটি টাকা। চাকরি ছেড়ে দেশের বাইরে, মারা গেছেন এ রকম শিক্ষকরাও বেতন ভাতা পাচ্ছেন। কলেজের উপাধ্যক্ষ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে বেতনভাতা নিয়েছেন দুই জায়গা থেকে। অতিরিক্ত শাখা বা শিফট না থাকার পরও শিফটের নামে প্রতি মাসে বেতনের বাইরে নিচ্ছেন ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সরকারি চাকরিজীবীদের মতো তারা বাড়ি ভাড়াও নিচ্ছেন। তাও একবার নয়, মাসে দুইবার। এ রকম ভয়াবহ জালিয়াতি, নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত দনিয়া কলেজে। কলেজটিতে গত ৬ বছরের লুটপাট হয়েছে ৪৪ কোটি টাকার বেশি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমন ভয়াবহ লুটপাটের চিত্র উঠে এসেছে।

ডিআইএ কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ তদন্তের নির্দেশ দেয়ার পর গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারী মাসে অধিদপ্তরের একটি টিম তদন্ত করতে গিয়ে কলেজে ব্যাপক লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জমা হয়েছে। ডিআইএ উপপরিচালক রসময় কীর্ত্তনীয়া, শিক্ষা পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম, হেমায়েত উদ্দিন, সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক প্রলয় দাস এবং অডিট অফিসার মোকলেছুর রহমান কলেজের পুরো বিষয়টি তদন্ত করেন।

কলেজের আয়-ব্যয় যাচাই করে তদন্ত কমিটি বলছে- গত অর্থবছরে কলেজটিতে বেসরকারি ব্যয় ছিল ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯৮ টাকা। অথচ কলেজের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থেকে তোলা হয়েছে ১৮ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৮৪ টাকা। অর্থাৎ ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৬ টাকা অপ্রদর্শিত রয়েছে। এ টাকা কোন খাতে ব্যয় হয়েছে বা কোন ফান্ডে জমা আছে তা দেখাতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২ কোটির বেশি টাকা অপ্রদর্শিত রয়েছে। একইভাবে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে অপ্রদর্শিত রয়েছে ৩ কোটি টাকা। এ তিন বছরে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা কলেজের ফান্ড থেকে গায়েব হয়ে গেছে। এসব টাকা ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপনের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া কলেজে ২০১৩-১৪ অর্থ বছর হতে চলতি বছর জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যাংক থেকে উঠানো মোট ১ কোটি ৪০ লাখ ১১ হাজার টাকার কোনো হিসাব কলেজের কাছে নেই। যা সরাসরি আত্মাসাৎ হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ভ্যাট বাবদ মোট ১ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা কাটা হলেও সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়নি। আয়কর বাবদ ৮৩ লাখ ১০ হাজার ৭৬৫ টাকা কাটা হলেও সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি। ১৯৯৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বেতন বইয়ের ৩৭ হাজার ২৩০টি রাজস্ব স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়নি। এরপর ২০১২ থেকে সর্বশেষ পর্যন্ত সরকারি ও বেতন বই না থাকায় রাজস্ব ট্যাম্পের কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি।

তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০ খাতে টাকা আদায় করে কলেজ। এসব খাত থেকে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ জুন পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আয় হলেও ফান্ডে কোনো টাকা নেই। পুরো টাকাই ব্যয় হয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তার কোনো ভাউচার দেখাতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, খাত ভিত্তিক আয় হলেও খাত ভিত্তিক ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্য নেই। যা সরাসরি আত্মসাতের শামিল।

কলেজের ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণে ভয়াবহ দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ১১টি কিস্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে মোট ১০ কোটি ২ লাখ ২১ হাজার টাকায় চুক্তিনামা হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করা হয়েছে ১৬ কোটি ৬২ লাখের বেশি। অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে ৬ কোটি ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ঠিকাদারকে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হলেও চেক রেজিস্ট্রারে লেখা হয়নি। শুধু তাই নয়, ১০তলা ভবন নির্মাণের ব্যয় ক্যাশ বইয়ে লেখা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে ৫০০ জোড়া বেঞ্চ কেনা হয়। এসব বেঞ্চ সরবরাহ করার পর তা রেজিস্ট্রার খাতায় লেখা হয়নি। আদৌ ৫০০ জোড়া বেঞ্চ কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান দিয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়াও কলেজে মোট ২২জন শিক্ষক বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ পেয়ে মোট ১ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা আত্মাসাৎ করেছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন বিধিবহির্ভূতভাবে ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৩ টাকা আত্মাসাৎ করেছেন। আর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক এ তিনজন মিলে মোট ৮৮ লাখ ৪০৮৩ টাকা আত্মাসাৎ করেছেন।

শিক্ষক নিয়োগে যত অনিয়ম: কলেজের তথ্য অনুযায়ী কলেজের মোট ১৭৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭২৯০ জন। উচ্চ মাধ্যমিকে ৩২৮৯ জন এবং স্নাতক (পাস) ২৫৭জন, স্নাতক (সম্মান) ৩৭৪৪ জন। ১৭৪ জন শিক্ষকের মধ্যে বিধিবহির্ভূক্তভাবে নিয়োগ পেয়েছেন ২২ জন। তাদের মধ্যে অন্যতম উপাধ্যক্ষ মো. মোশারফ। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ২০০৪ সালের ২৫ আগস্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর দুই বছর পর তিনি আদালতে মামলা করে পদে ফিরে আসেন। এর আগে ২০০৯ সালে তিনি মানবিক সাহায্য বাবদ ৭ লাখ টাকা অনুদান নেন। মামলা চলাকালীন সময় ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত শরিয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মামলার কারণে ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সরকারি বেতন ভাতা পাননি। পরে কোর্টের রায় অনুযায়ী, মামলা চলাকালীন সময় বেতন ভাতা হিসেবে কলেজ থেকে ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা বাদ দিয়ে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ১১৫ টাকা নিয়েছেন। একই সময়ে তিনি উৎসব ভাতা ৪ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং অন্যান্য আনুতোষিক সুবিধা বাবদ ২৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকা নিয়েছেন। বিধিবহির্ভূতভাবে তিনি এ খাতে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮’শ টাকা নিয়েছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে কলেজের তহবিল থেকে চিকিৎসা ও এককালীন সুবিধা বাবদ ২ লাখ ১৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। এটি ফেরতযোগ্য। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন কলেজ তহবিল থেকে পূর্ণ বেতনভাতা নিয়েছেন। গত ২০০৯ মার্চ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ২৩ লাখ ২০ হাজার ২৮৩ টাকা নিয়েছেন। অতিরিক্ত ভাতা বাবদ ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ও দায়িত্বভাতা ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা নিয়েছেন।

অর্থনীতির প্রভাষক লুৎফুন্নেসা লাকী (ইনডেক্স ৪৩৬৩৭৩)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তার এমপিও বিধিসম্মত নয়। তার বেতন ভাতা বাবদ নেয়া ৮ লাখ ৭৪ হাজার ২৯৬ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। প্রভাষক সেলিনা ইয়াসমিন (ইনডেক্স ৩০৯০৪৪৪) এমপিওভুক্ত তাকেও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে বিধিবহির্ভূতভাবে। তার নেয়া ১৩ লাখ ২৫ হাজার ২৫০ টাকা ফেরতযোগ্য। প্রভাষক ড. মো. রেজাউল করিম (ইনডেক্স ৪১৫৩১১) এমপিও বিধিসম্মত না হওয়ায় বেতন ভাতা হিসেবে নেয়া ৩৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৪১ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। প্রভাষক মোহাম্মদ আবিদ মিয়া (ইনডেক্স ৩০০৬১৬০) গত ২০০৬ সালের ১ মে এমপিওভুক্ত হন। শিক্ষক নিবন্ধন না থাকার পরও তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। প্রভাষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান (ইনডেক্স ৩০৮৯৩৩০) গত ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি এমপিওভুক্ত হন। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া প্রার্থীকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় হওয়া মজিবুরকে নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সেহেতু তার নিয়োগ বিধিসম্মত নয়। তিনি সরকারের কোষাগার থেকে অবৈধভাবে নিয়েছেন ১১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। মৌখিক পরীক্ষায় সব শ্রেণিতে প্রথম হওয়া আসমা সিদ্দিকাকে কম নম্বর দিয়ে প্রভাষক মাসুদুর রহমানকে প্রথম করে নিয়োগ দেওয়া হয় গত ২০১৬ সালে। তিনি ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে নিয়েছেন। যা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য। একইভাবে বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন খালেদা আখতার (ইনডেক্স ৩০৯৩১৬৬)। তার সময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় ৮৩ শতাংশ (৩৪ জন) পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। প্রার্থীদের ইন্টারভিউ কার্ড পাঠানোর কোনো ডকুমেন্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। পরীক্ষায় খালেদা দ্বিতীয় হলেও প্রথম হওয়া রেহানা পারভিনকে বাদ দিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা নিয়োগকালে ডিগ্রি পাস দর্শন বিষয়ে কাম্য শিক্ষার্থী ছিল না। তাই তার এমপিওভুক্তি যথাযথ নয়। তার বেতনভাতা বাবদ পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য। একইভাবে এমপিওভুক্ত হয়েছেন ফাহমিদা শারমিন, প্রভাষক সাগর চন্দ্র দেবনাথ, ভুগোলের প্রভাষক সাঈদা আফরোজ আহসান ছাড়াও বেশ কয়েক প্রভাষক। যাদের চাকরি ও এমপিওভুক্তি বিধিসম্মত হয়নি। নাজিবা আক্তার বিধিবহির্ভূতভাবে সহকারী অধ্যাপকের গ্রেড নিয়েছেন। তার নেওয়া ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য। সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া আক্তার অনিয়ম করে সরকারের কোষাগার থেকে নিয়েছেন ৪ লাখ ২২ হাজার ৯৪০ টাকা। বিধিবহির্ভূতভাবে সহকারী অধ্যাপকের টাইমস্কেল নিয়েছেন মনোবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক শাহানা আখতার, ভূগোলের সহকারী অধ্যাপক খাদেম আশরাফুল আলমসহ আরও ছয়জন শিক্ষক। বিধিবহির্ভূতভাবে টাইমস্কেল নিয়ে অতিরিক্ত যে টাকা নিয়েছেন তা সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া কথা বলা হয়েছে। এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বেসরকারি হিসেবে বাড়িভাড়া গ্রহণ করেছেন। আবার সরকারি চাকরিজীবীদের ন্যায় সরকারি বিধিমতে কলেজ থেকে বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন। বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন ২ বার করে। সরকারি হিসাবে সব বাড়িভাড়া ফেরতযোগ্য। বর্ধিত বেতনও নিচ্ছেন সরকারের কাছ থেকে ও কলেজের ফান্ড থেকে। এক বছরের ইনক্রিমেন্ট বাবদ আড়াই লাখের বেশি টাকা ফেরতযোগ্য।

এ কলেজে বাড়তি কোনো শিফটের মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেই। কলেজ পর্যায়ে শিফট চালুর নিয়মও নেই। অথচ শিক্ষক কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ শিফট ভাতা নিচ্ছেন। এক মাসেই ১১৫ শিক্ষক-কর্মচারী ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকার বেশি শিফট ভাতা নিয়েছেন। বেতনভাতা বাবদ এমপিওভুক্তদের থেকে ২০ টাকা ও নন এমপিওদের কাছে ১০ টাকা কেটে রাখা হলেও বেতন বিলে কোনো রাজস্ব ব্যবহার করা হয়নি।

শিক্ষক একরামুল হক প্রতি মাসে সরকারিভাবে বেতনভাতা বাবদ ৪৩ হাজার ৪২৫ টাকার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে কলেজ থেকে নিয়েছেন ৯৭ হাজার ১৩২ টাকা। এছাড়া প্রতি মাসে ভাতাও নিয়েছেন ২৫ হাজার করে। অথচ মূল পদে থাকা অবস্থায় অতিরিক্ত ভাতা নেয়া কোনো সুযোগ নেই। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক সায়রা বেগম বেতনভাতা বাবদ সরকারিভাবে প্রতি মাসে নিয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৭৫ টাকা। কলেজ ফান্ড থেকে নিয়েছেন প্রতি মাসে ১ লাখ ৩ হাজার ৩৯৬ টাকা। এছাড়া দায়িত্বভাতা বাবদ হিসেবে প্রতি মাসে নিয়েছেন ৪১ হাজার টাকা। অথচ বিধিমতে মূল বেতনের ১০ শতাংশ অর্থাৎ সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা নিতে পারবেন তিনি। অতিরিক্ত নেয়া এসব টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে ফেরতযোগ্য। তার জন্য গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে। অথচ অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে গাড়ি বাবদ আরও অতিরিক্ত প্রতি মাসে ৫ হাজার ২৪৮ টাকা নেন তিনি।

জানা গেছে, কলেজটি ১৯৮৪ সালে আর মাধ্যমিক স্তর এমপিওভুক্ত হয় ১৯৮৬ সালে। পরে ১৯৯৩ সালে স্নাতক স্তর এমপিওভুক্ত হয়। ২০০৫ সালে ৩৫৪ জন কলেজের সমন্বিত আদেশের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোড পরিবর্তন করা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি স্তরের সর্বেশেষ এমপিও হয় ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে। মনেবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক শাহানা আক্তার, প্রাণীবিদ্যার প্রভাষক লুৎফন নাহার এবং অর্থনীতির হাবিনা সুলতানা চাকরি ছেড়ে আমেরিকা ও দুবাই চলে গেছেন। লাইব্রেরিয়ান ওহিদুজ্জামান চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। এছাড়া আরও তিনজন মৃতু্যবরণ করেছেন। তাদের বেতন নিয়মিত উঠানো হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

পুরো অভিযোগের ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সায়মা সুলতানা ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তদন্ত কমিটির।

সূএ:যাদি/২৪০৯/এটিভি