ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,০৪ জানুয়ারি : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সব আন্দোলন সংগ্রামেই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রাণ দিতে হয়েছে ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মীকে। আজ শনিবার বিকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সংগঠনের ইতিহাস মাথায় রেখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিলো। ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মী দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। কাজেই ইতিহাসের কথা মাথায় রেখে নেতাকর্মীদের কাজ করে যেতে হবে যেন দেশের মানুষ এই সংগঠনের প্রতি আস্থা পায়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল দেয়া হলো। তখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিলো। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থেকেই চিন্তা করলেন এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। তিনি ৬০ সালে মুক্তি পান। কিন্তু সব নিষিদ্ধ ছিলো। তিনি তখন থেকে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। সারা দেশে নিউক্লিয়াস সেল করে মানুষের মাঝে উদ্দিপনা জাগানোর চেষ্টা করেছিলেন।আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদর্শ ও নীতি ছাড়া কোনোদিন নেতৃত্ব তৈরি হয় না। নীতি ছাড়া কেউ কোনোদিন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জাতিকে কিছু দিতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছিলেন। কারণ তার মধ্যে নীতি ও আদর্শ ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা নীতি নিয়ে, আদর্শ নিয়ে ছাত্রলীগকে পরিচালিত হতে হবে। এর মাধ্যমেই আগামীতে দেশ পরিচালনায় যোগ্য নেতৃত্ব পাওয়া যাবে। ছাত্রলীগকে একটি আদর্শ নিয়ে চলতে হবে। আগামী দিনের নেতৃত্ব যেন প্রজন্মের পর প্রজন্মের একটি ধারাবাহিকতায় আসে। এ নেতৃত্ব যেন ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়, সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে হবে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল উল্লেখ করে বাঙালি জাতির ইতিহাসে ছাত্রলীগের নানা অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেদিক থেকে ভাবতে গেলে ছাত্রলীগই মুরুব্বি সংগঠন।
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দলীয় সভাপতিতে স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানায়। ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শুভ শুভ শুভ দিন-ছাত্রলীগের জন্মদিন’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা উদ্যান।উত্তরীয় পরিয়ে শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন ছাত্রলীগের নেতারা। পরে জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীতের মাধ্যমে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। এরপর দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়।অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন হাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছেন। দুপুর হওয়ার আগেই সংগঠনটির সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মীদের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।প্রসঙ্গত ১৯৪৮ সালের এদিনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান উপমহাদেশের বৃহৎ এ ছাত্রসংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে সংগঠনটির নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ’।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটি ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামে কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্রসংগঠনটি।