ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,সিলেট প্রতিনিধি,০২ নভেম্বর : সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বিএনপির মধ্যে। কমিটি ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন কেন্দ্রীয় নেতাসহ সিলেট বিএনপির একাংশ। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে নগরের কুমারপাড়া এলাকায় সভা করেছেন বিক্ষুব্ধরা। সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।সভায় বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও যুবদলের অবমূল্যায়িত ত্যাগী নেতাকর্মীরা দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে তাদেরকে থামিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় তিন নেতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেন তারাই দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এবং আজই (শনিবার) দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। পরবর্তীতে সভায় উপস্থিত থাকা বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও গণপদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত থাকা সিলেট জেলা যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, শুক্রবার সিলেট জেলা ও মহানগরের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে এতে দীর্ঘদিন ধরে যুবদলের রাজনীতি করা কেউ ঠাঁই পাননি। ঠাঁই পেয়েছেন বিশেষ একজন কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারীরা। তাই রাতেই তারা সিলেটে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক, আরিফুল হক চৌধুরী ও ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তিনি আরও বলেন, অতীতে সিলেটে বিএনপির যে কোনো অঙ্গসংগঠনের কমিটি করা হলে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে করা হতো। কিন্তু এবারের কমিটির ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, তাহসিনা রুশদী লুনাসহ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।এবিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের মেয়র আরিফ বলেন, ‘রাজপথে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন তাদেরকে জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। এই কমিটি লন্ডন থেকে দেওয়া হয়েছে। এমনকি যারা দলের পক্ষে আন্দোলন করে নির্যাতিত হয়েছেন তাদেরকেও মূল্যায়ন করা হয়নি। যার কারণেই আমরা কেন্দ্রীয় পদ থেকে পদত্যাগ চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করবো।’কারা পদত্যাগ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৮-১০ জন কেন্দ্রীয় নেতা পদত্যাগ করবেন। পদত্যাগ করলেও আমরা বিএনপির সঙ্গে থাকবো।’কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দলকে লন্ডন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে বেকায়দায় ফেলা হচ্ছে। যুবদলের যে কমিটি করা হয়েছে তাতে পুরনো কেউ নেই। নতুনদের নেতৃত্বে দেওয়া হয়েছে। যারা দলের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছেন, কারা ভোগ করেছেন তাদেরকে মূল্যায়ন না করেই যারা আন্দোলনে না থেকে পালিয়ে ছিলেন তাদেরকে দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। যারা বঞ্চিত হয়েছেন তারা আমাদের কাছে প্রতিকার চেয়েছে। আমরা সমাধান দিতে পারিনি বলেই পদত্যাগ করতে যাচ্ছি।তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পদত্যাগ করার পর পরবর্তীতে বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও গণপদত্যাগ করবেন।’জানা গেছে, শুক্রবার (১ নভেম্বর) যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কমিটিতে জেলার আহ্বায়ক করা হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাপলুকে ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক করা হয় নজিবুর রহমান নজিব। এছাড়াও জেলা শাখার ২৯ সদস্য ও মহানগর শাখায় যুবদলের ২৭ জনকে সদস্য করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।