আরমানের ইয়াবা ব্যবসার চাঞ্চল্যকর তথ্য, জড়িত ছিলেন অনেকে

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,২৭ অক্টোবর : সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সঙ্গে গ্রেফতার হন এনামুল হক আরমান। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে মিলেছে ইয়াবা ব্যবসার চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আরমান ঢাকায় ইয়াবার অন্যতম ডিলার ছিলেন। কক্সবাজার থেকে ইয়াবা ঢাকায় আনতেন।

অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি বিপুল অর্থ আয় করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

মাদক থেকে তিনি কীভাবে আয় করতেন তাও প্রকাশ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে। জানিয়েছেন, কক্সবাজারের দু’জন মাদক ব্যবসায়ী তাকে ইয়াবা সরবরাহ করতেন। তার একজন আকতার কামাল।

আরেকজন কক্সবাজারের সাবেক এক এমপির ভাগ্নে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যে ২৫২ জনের তালিকা করা হয়েছিল তার মধ্যে ৫০ জনকে মাদকের সম্রাট হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

আরমানকে প্রথমে আকতার ইয়াবার চালান সরবরাহ করতো। র‌্যাবের মাদক অভিযান শুরু হলে তিনি আত্মগোপনে যান। একপর্যায়ে তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়লে মাদক উদ্ধার অভিযানে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে আকতার নিহত হয়। তার মৃত্যুর পর ইয়াবার চালানে সংকট দেখা  দেয়। তখন ক্যাসিনো ডন সম্রাটের হাত ধরে ওই এমপির ভাগনের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটলে আবারও আগের মতো রমরমা ইয়াবা বাণিজ্য চলতে থাকে।

এরপর থেকেই ওই এমপির ভাগ্নে তাকে ইয়াবা সরবরাহ করতেন। প্রত্যেক মাসে তিনি ইয়াবা থেকে ২ লাখ টাকা আয় করতেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানো জন্য আরমানের সহযোগীরা কক্সাবাজার থেকে সরাসরি সড়কযোগে ঢাকায় ইয়াবা আনতেন না। কক্সবাজারে ইয়াবার চালানকারীর লোকজন প্রথমে ইয়াবা সড়কপথে নোয়াখালী নিয়ে যেতেন। পরে নোয়াখালী থেকে লঞ্চে করে ওই চালান ঢাকার সদরঘাটে আসতো। ওই চালান খালাস করার জন্য সদরঘাটের একাধিক কুলির সর্দার জড়িত । তাদের কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। আরমান বিপুল পরিমানের ইয়াবা ঢাকায় নিয়ে এসে তার সহযোগীদের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিতেন। আরমানকে ঘিরে ইয়াবার একটি চক্র গড়ে উঠেছিল।

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরমান  ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে যান। এরআগে সম্রাটের অন্যতম সহযোগী খালেদ হোসেন ভুঁইয়া কক্সাবাজার থেকে ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে আসতেন। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খালেদ ও আরমানের মধ্যে মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলে তাদের গুরু ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়। সম্রাট খালেদকে ক্যাসিনো পাড়া মতিঝিলের একাধিক ক্লাবে মনোযোগী হতে বলেন।

অপরদিকে, আরমানকে ইয়াবার চালানের দেখভাল করতে বলেন। এরপর থেকে আরমান ঢাকার ইয়াবা চালানের প্রধান ডিলারে পরিণত হন।

সূত্র জানায়, কক্সাবাজার থেকে সড়ক পথে নোয়াখালী হয়ে নৌ পথে ঢাকার সদরঘাটে যখন ইয়াবা ট্যাবলেট আসতো তখন ওই ইয়াবা বহন করার জন্য আরমানের সহযোগীরা একটি সাদা মাইক্রোবাস ব্যবহার করতেন। ওই মাইক্রোবাসে কেন্দ্রীয় যুবলীগের একটি লোগো লাগা থাকতো। আরমানের নির্দেশে মূলত তার সহযোগীরা ওই লোগো লাগিয়েছেন এজন্য যে, যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গাড়িতে তল্লাশি না করে।

সূত্র আরও জানায়, গত বছরের মার্চে বংশাল মোড়ে ওই মাইক্রোবাসে থাকা আরমানের সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের বাক-বিতণ্ডা হয়। এসময় আরমান সেখানে থাকা কর্তব্যরত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

সূত্র: মানবজমিন