ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাসায় অভিযান : আটক ২

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,২৭ অক্টোবর : চলচ্চিত্র প্রযোজক ও আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের রাজধানীর গুলশানের বাসায় অভিযান চলছে। আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে তার বাড়িতে অভিযান শুরু করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।অভিযানে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এ সময় আটক করা হয়েছে বাড়ির দুই তত্ত্বাবধায়ককে। বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়া এই অভিযান সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্তও চলছিল।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই। বাংলাদেশের রহস্যময় ব্যক্তিদের তালিকা করলে প্রথমদিকেই থাকবে যার নাম। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে নিয়ে এসব গল্পের বেশিরভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যা কেন্দ্রিক। এসব গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু মুখরোচক বা মিথ্যা সে নিয়েও আছে নানা মত।

ইউকিপিডিয়া বলছে, আজিজ মোহাম্মদ ভাই একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি হত্যা ও মাদক পাচারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন তিনি।১৯৪৭ এ দেশভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাট থেকে বাংলাদেশে আসে। ধনাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করে।১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইস্পাত প্রযোজকের পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন।তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্সের আজীবন সদস্য। অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিটিউক্যাল, এমবি ফিল্ম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই।এছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরে রয়েছে তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসা। মাদক ব্যাবসার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে। তিনি সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য। মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে মুক্ত করতে আগা খান, প্রিন্স করিম আগা খান নিজেই বাংলাদেশে এসেছিলেন।

১৯৯৭ সালে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। যদিও হত্যাকাণ্ডের সময় থাইল্যান্ডে ছিলেন আজিজ। কিন্তু সেটাকে আত্মহত্যা বলেই প্রচার করা হয়। যদিও সালমান শাহের পরিবার ও তার ভক্তদের ধারণা এটা হত্যাকাণ্ড।সম্প্রতি আজিজ মোহাম্মদ ভাই সপরিবারে থাইল্যান্ডে থাকতেন। সেখান থেকেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। আরো আছে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে।থাইল্যান্ডে গেলে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের অনেকেই আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের আতিথেয়তা পান। তার মতো সালমানের স্ত্রী সামিরারও থাইল্যান্ড এ বসবাস সন্দেহকে বাড়িয়েই দেয়। সেই ঘটনা আবার তুমুল আলোচনার ঝড় তুলে সালমানের বিউটিশিয়ান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী রাবেয়া সুলতানা রুবির ফেসবুকে তুলে ধরা এক ভিডিওবার্তায়।সালমান শাহের মৃত্যুর দুই বছর পর ১৯৯৯ সালে ঢাকা ক্লাবে খুন করা হয় আরেক চিত্র নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। এ হত্যাকাণ্ডেও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও তার পরিবারের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।২০০৭ সালে তাকে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য অভিযুক্ত করা হয়। এই একই অপরাধে ২০১৩ সালে তার ভাতিজা আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়েছে।