ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ফেনী প্রতিনিধি,২০ এপ্রিল : ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যায় যারা বোরকা পরে অংশ নিয়েছিল তাদের একজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে খাল থেকে একটি বোরকা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পিবিআই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, নুসরাতের সহপাঠী রিমান্ডে থাকা জোবায়েরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সোনাগাজী সরকারি কলেজের পেছনের খাল থেকে তারা এই বোরকাটি উদ্ধার করেন।
জোবায়ের এই মামলার এজহারভুক্ত আট আসামির একজন। তাকে গত ৯ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জোবায়ের এখন রিমান্ডে রয়েছেন।
পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, “নুসরাতের সহপাঠী জোবায়ের এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোনাগাজী সরকারি কলেজের পেছনে একটি খালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে থেকে হত্যার সময় ব্যবহৃত তিনটি বোরকার একটি উদ্ধার করে পিবিআই।
“এর আগে শুক্রবার দুপুরে অপর আসামি কামরুন নাহার মনির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই জেনেছে সোনাগাজী পৌরশহরের মানিক মিয়া প্লাজার একটি দোকান থেকে মনি বোরকা কেনেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া পুরুষদের গায়ে যে তিনটি বোরকা ছিল তার একটি উদ্ধার করল পিবিআই।”
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত ছিলেন ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী। গত ৬ এপ্রিল আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় কয়েকজন। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যান।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতের পরিবারের দায়ের করা মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষর লোকজন তার গায় আগুন দেয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
এ ঘটনায় মামলায় অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এ মামলায় এজহারভুক্ত আটজনসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে চারজন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর ১৩ আসামি বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছেন।
এছাড়া শুক্রবার সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পিবিআই। তবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না তা তারা এখনও নিশ্চিত করেনি।